ডেস্ক নিউজ:
নির্বাচনের ফলাফলে ‘ক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত’ বিএনপি ধীরে চলো নীতিতে নতুন করে সামনে এগোতে চাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্বাচনে অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। ‘ভোট জালিয়াতি’র তথ্য সংগ্রহের জন্য ধানের শীষের প্রার্থীদের আজ জরুরিভাবে ঢাকায় ডাকা হয়েছে। তাদের সাথে দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করবেন। এসব তথ্য শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে দলটি। একই সাথে বিদেশীদের কাছেও এটি তুলে ধরা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংগঠন গোছানোর কাজে মনোযোগ দেবে হাইকমান্ড। এ ক্ষেত্রে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার বিষয়টিও প্রাধান্য পাচ্ছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, শিগগিরই বড় কোনো কর্মসূচির দিকে তারা যাচ্ছেন না। সারা দেশে অন্তত ২১ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার থাকায় তাদের মুক্তি নিশ্চিত হওয়ার পরই পরবর্তী করণীয় সামনে আনবে বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, অন্তত কয়েক হাজার নেতাকর্মী আছে, যাদের গ্রেফতার দেখানো হয়নি, কিন্তু তাদের আটক রাখা হয়েছে। এই নেতাদের জীবন বিপন্ন হয়ে যাবে যদি ভুল কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত দলীয় প্রার্থীদের শপথ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এখন দলটি নির্বাচনে অনিয়মের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমকে অবহিত করবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় ধানের শীষের প্রার্থীদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সকাল ১০টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।

জানা গেছে, নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি, এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ও নিহতদের তালিকা, প্রতিটি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোটের হিসাবসহ ৮টি বিষয়ে তথ্য-প্রমাণসহকারে একটি প্রতিবেদনও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর জমা দেয়ার জন্য সব প্রার্থীর কাছে জরুরি বার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ভোটের দিন ব্যালট পেপারে সিল মারাসহ ভোট কারচুপির ভিডিও ফুটেজ থাকলে তা-ও প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত করতে বলা হয়েছে।

একাধিক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট বিপর্যয়ের পর বিএনপি প্রতিটি আসনে ভোট কারচুপির তথ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহের অংশ হিসেবে এই প্রতিবেদন সংগ্রহ করছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ইতোমধ্যে কর্মসূচি দিয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে এ দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা সরকার গঠন করবে। এই সরকারের নীতি কী হয়, আচরণ কেমন এসব দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগামীতে যেকোনো ধরনের কর্মসূচি দেয়ার আগে নেতাকর্মীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নেয়া হবে। এরপর সংগঠন পুনর্গঠনে মনোযোগ দিতে হবে। এরপর আসবে পরবর্তী নির্বাচনের প্রশ্ন। স্থায়ী কমিটির প্রবীণ এক সদস্য বলেন, ‘আমি তো মনে করি নেতৃত্বের পুনর্গঠন হওয়া দরকার।’

আরেক সদস্য বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এখন কাজ হবে দেশে যারা কাজ করছেন তাদের ওপর বিশ্বাস রাখা এবং পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে স্থায়ী কমিটির বর্তমান সদস্যদের ওপর ভরসা করা।