বার্তা পরিবেশক :

কবি মীর্জা আসাদুল্লাহ খান গালিব ছিলেন, ঊর্দু ও ফার্সি সাহিত্যের এক উল্লেখ যোগ্য কবি। তিনি চিরদিনের প্রেমের কবি, ভালোবাসার কবি। আপন অস্তিত্বকে তিনি প্রবল করে তুলেছিলেন এ পৃথিবীর রূপ, সুধা, সৌন্দর্যের মাঝে। রসবোধহীন, নিরানন্দ জীবনের জগৎ ছিল তার কাছে অর্থহীন, মূল্যহীন। আমৃত্যু রূপবান, সুদর্শন গালিব তার নিজের পৃথিবীকে এঁকেছিলেন জাত শিল্পীর নান্দনিক তুলিতে। নানা বর্ণে-গন্ধে রাঙাতে চেয়েছেন তার যাপিত জীবনকে। প্রতিক্ষণে, প্রতি পদে তিক্ততার গ্লানি আর বিষন্নতার অনুজ্জ্বল বদন তাকে সম্পূর্ণভাবে গ্রাস করতে পারেনি। যদিও বারবার বিক্ষত-বিপন্ন করেছে তার ছন্দময়তাকে। তিনি অকুতোভয়, অপরাজেয় থেকেছেন জীবনের প্রশ্নে, এমনকি ভোগ-বিলাসের প্রশ্নেও। গালিব বলতেন, ‘কবিতা না যুদ্ধ কোনটি বেশি সম্মানের, আবার নিজেই উত্তর দিয়েছেন, আমার পূর্ব পুরুষের যুদ্ধই অধিকতর মর্যাদাবোধের পেশা। কাব্য বা শের আমাকে অধিকতর কিছু দিতে পারবে না।’

ঊর্দু ও ফার্সি সাহিত্যের বিখ্যাত কবি মীর্জা আসাদুল্লাহ খান গালিবের ২২১তম জন্ম-জয়ন্তী পালন উপলক্ষে আয়োজিত কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩৬তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন।

২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার বিকালে শহরের এন্ডারসন রোডস্থ একাডেমীর অস্থায়ী কার্যালয়ে একাডেমীর পাক্ষিক সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়।

একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আলোচনা করেন একাডমেীর স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ, একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী ও নির্বাহী সদস্য কবি নুরুল আলম হেলালী প্রমুখ।

সভায় বক্তাগণ বলেন, গালিব তার কাব্যপ্রতিভা জন্মগতভাবেই পেয়েছিলেন। তার উর্দু কাব্যের মূল বিষয় ছিল প্রেম। প্রেমিক-প্রেমিকার মান-অভিমান, বাদ-প্রতিবাদ, সৃষ্টিকর্তা, বিরহ-মিলন-বিচ্ছেদে ভরপুর। উর্দু ও ফারসি ভাষায় লেখা তার গজলের শের সংখ্যা অনেকে বলেন, দুই হাজারের বেশি।

ভারতবর্ষে মোঘল-স¤্রাজ্যের শেষ ও ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকের উর্দু এবং ফার্সি ভাষার কবি মীর্জা আসাদুল্লাহ খান গালিব সাহিত্যে তার অনন্য অবদানের জন্য দাবির-উল-মালিক ও নাজিম-উদ-দৌলা উপাধি লাভ করেন। তাঁর সময়কালে ভারতবর্ষে মোঘল সা¤্রাজ্য তার ঔজ্জ্বল্য হারায় এবং শেষে ১৮৫৭ সালের সিপাহীবিদ্রোহ এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশরা পুরোপুরিভাবে মোঘলদের ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসন দখল করে, তিনি তার লেখায় এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন। মহাবিদ্রোহের সময়কার তার লেখা সেই দিনলিপির নাম ‘দাস্তাম্বু’।

কবি আসাদুল্লাহ গালিব ১৭৭৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর ভারতের আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ব পুরুষ তুরস্ক থেকে ভারতবর্ষে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। পরে তিনি দিল্লিতেই তার স্থায়ী নির্বাস গড়ে তুলেন।

পরে কবি সুলতান আহমদ, কবি রুহুল কাদের বাবুল, মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও কবি নুরুল আলম হেলালী কবির অনুদিত কবিতা পাঠ করেন।

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩৭তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা ৪ জানুয়ারি

বার্তা পরিবেশক

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩৭তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা আগামী ৪ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার বিকাল ৪টায় শহরের এন্ডারসন রোডস্থ একাডেমীর অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর জীবন সদস্য, কক্সবাজার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মুফীদুল আলমের অনুবাদ গ্রন্থ ‘রুবায়াতে ওমর খৈয়াম’ নিয়ে আলোচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে একাডেমীর সংশ্লিষ্ট সকলসহ জেলার কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্যামোদিদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল আহবান জানিয়েছেন।