বার্তা পরিবেশক:

আওয়ামী লীগের লোকজন এবং পুলিশের বাধায় কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের ২৩ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কারাবন্দী হামিদুর রহমান আযাদের পক্ষে সব ধরণের প্রচারণা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কুতুবদিয়ায় পরিস্থিতি মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে। হামিদ আযাদের স্ত্রী জেবুন্নেছা হামিদ এই অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে তিনি ইতিমধ্যে কয়েক দফা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ মতে, নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের আটক করছে। এসব মামলায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩০ জনের বেশী নেতাকর্মী। প্রচারণা শুরুর পর থেকে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে প্রতিদিন ঐক্যফ্রন্টের হামিদ আযাদের আপেল মার্কার লোকজনকে নানাভাবে বাধা ও হয়রানি করছে নৌকার লোকজন ও পুলিশ। গণসংযোগে বাধা, প্রচারণা মাইক ও গাড়ি ভাংচুর, মারধর, পুলিশ কর্তৃক কর্মীদের আটক এবং হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে এসে পরিস্থিতি অত্যন্ত মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে। বাধায় কুতুবদিয়ায় হামিদ আযাদের পক্ষে প্রচারণা করা যাচ্ছে না। হুমকি ও পুলিশী আটকের ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়ে গেছে কর্মীরা।

অভিযোগ মতে, সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকাল থেকে কুতুবদিয়ার কয়েকটি এলাকায় কর্মীদের নিয়ে তিনি কয়েকটি পথসভায় অংশ নেয়ার কথা ছিলো। এই খবর পেয়ে কুতুবদিয়া থানার প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ ও অর্ধশতাধিক স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী জেবুন্নেছা হামিদ বাড়ি থেকে বের হওয়া আগেই বাড়ির চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি অবরুদ্ধ ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামিদ আযাদ, জেবুন্নেছা হামিদ ও আপেল মার্কার সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে নানা অকথ্য বকাবকিও করছে।

ছোটমহেশখালী বড়বিল এলাকায় নৌকা সমর্থক খোকন, রহিম, হেলাল, রিয়াদ, হোছাইন আহমদসহ ১৫-২০ সশস্ত্র লোকজন আপেল মার্কার গণসংযোগে বাধাদান এবং কর্মীদের ধাওয়া করে। কুতুবদিয়ায় ধুরুংবাজারে নৌকা সমর্থক আবু ওমর, হোছাইন, রনি, মুজাহিদ ও জিকুর নেতৃত্বে মাইকিংয়ের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। আরেক ঘটনায় ধুরুংবাজারে আপেল মার্কার মিছিলে হামলা করে নৌকা সমর্থকরা। এতে ১০-১৫ জন আহত হয় এবং একজন নিখোঁজ হয়। এছাড়াও আপেল মার্কার প্রচারণা করতে বের হলেই তাদের হামলে পড়ছে নৌকার লোকজন।

জেবুন্নেছা হামিদ বলেন, কুতুবদিয়া থানার ওসি আপেল মার্কার সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে নির্দেশ দিচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর রাতেও ওসির নেতৃত্বে থানার এসআই জয়নালসহ পুলিশের দল অর্ধশতাধিক কর্মীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় তাদের না পেলেও অভিভাবকদের নির্দেশ দেয় কর্মীদের এলাকা ছাড়তে। এছাড়াও মাইকিং, গণসংযোগ, পথসভাসহ কোনো প্রচারণাই চালাতে দিচ্ছে না। নৌকার লোকজনের মতো পুলিশও একই ভূমিকায় কাজ করছে।

নির্বাচনী প্রচারণায় অব্যাহত হামলা, বাধা ও পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানিয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, মহেশখালী উপজেলা ও হামিদ আযাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জাকের হোসাইন এবং কুতুবদিয়া উপজেলা আমির মাওলানা আনোয়ার হোসেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ বন্ধ করার জন্য আহ্বান করছি। একই সাথে ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।