শাহীন মাহমুদ রাসেল:

কক্সবাজারের রামু উপজেলার মিঠাছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গত শুক্রবার (৯ই নভেম্বর)দিবাগত রাত ২ টায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতেরা বনতলার ভিতরে লম্বা ঘোনায় নূর আলমের বাড়িতে ডাকাতি করে স্থানীয় একদল ডাকাত। এতে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। গত এক মাসে গ্রামের অনেক বাড়িতে ডাকাতি হয়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে গ্রামবাসী রাত জেগে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। তবে কোনোভাবেই ডাকাতি ঠেকানো যাচ্ছে না।

এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ওই ডাকাত দল ঘোনার পাড়ার সুইস এলাকায় আবুবক্কর ও কাছিমের বাড়িতে ডাকাতি সংগঠিত করার চেষ্টা করে। ডাকাতের উপস্থিতি টের পেলে তাদের আত্মচিৎকার শুনে প্রতিবেশী লোকজন এগিয়ে এলে জনগনের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যাই সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। ডাকাত দলের তিন সদস্যকে চেনে ফেলার কারনে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে নূরুল আলম ও কাছিম নামের দুজনকে। এরা জানায়, তাদের হাতে বন্দুক ও অনেকের হাতে রামদা ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কিছুদিন ধরে মিঠাছড়ির ঘোনার পাড়া, ফকিরামুরা, পানের ছড়া, চাইল্যাতলী, এবং খুনিয়া পালং গ্রামে কারো’না কারো বাড়িতে একইভাবে ওই ডাকাতেরা পর্যায়ক্রমে হানা দেয়। এ সময় ডাকাতেরা বিভিন্ন বাড়ির লোকজনকে মারধর করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট চালায়।

নুরুল আলম ও কাছিমের ভাষ্যমতে, ডাকাত দলের প্রধান এবং ১২/১৪ মামলার ফেরারী আসামি ফরিদুল আলম(৩৮) সে পানের ছড়া পূর্বকুল এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে, একই এলাকার নুর আহমদের ছেলে জমিস, প্রকাশ (পুরা বাগুলা) মোঃ আলমের ছেলে শহিদুল্লাহ, সুলতান আহমদের ছেলে হাবিবুল্লাহ, অন্যরা হলেন, ফকিরা মুরা ও বনতলা এলাকার মোঃ ইলিয়াছের ছেলে শাহ আলম, ছৈয়দ হোসেন(বর্মায়া) ছেলে নুরুল ইসলাম, মৃত ওলামিয়ার ছেলে ইলিয়াস।

মিঠাছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টো বলেন, মূলত এরা সবাই চিহ্নিত ডাকাত দলের সক্রিয় এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। এদের কারণে ডাকাতি এবং নানা অপরাধ সংগঠিত হয়। শুধু তাই নয়, র‍্যাবের অভিযানকে সামনে রেখে মহেশখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা এক হয়ে ডাকাতি সংগঠিত করছে।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল মনছুর বলেন, ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে ডাকাতেরা বেশি সক্রিয় হয়েছে। তবে পুলিশ ডাকাতদের গ্রেপ্তারে সাধ্যমতো চেষ্টা চালছে।

পানের ছড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকায় একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় ডাকাত-আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো বাড়িতে হানা দিচ্ছে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ডাকাতেরা। গতরাতে এলাকার পাঁচটি বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। প্রশাসনের সর্বোচ্চ হস্তক্ষেপ কামনা করেন।