মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :


“২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে কাতারে প্রবাস জীবনযাপন করছি। দেশের জন্য, পরিবার পরিজনের জন্য সবসময় মন কাঁদে। বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আয় করে দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছি। বিগত ৩ বছরের মধ্যে নিজস্ব ব্যস্ততার জন্য অনেক আগ্রহ থাকা সত্বেও মাতৃভূমি বাংলাদেশে যেতে পারিনি। ২৯ অক্টোবর সোমবার গণমাধ্যমের বদৌলতে জানতে পেরেছি, কক্সবাজার শহরের ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন রাস্তায় রোববার ভোরে সংগঠিত কথিত ঘটনায় পুলিশের দায়েরকরা মামলার এজাহারে ৫ নং ক্রমিকে আমাকে নাকি আসামী করা হয়েছে! শুনে তাজ্জব হয়েছি! এটা কিভাবে হয়?”

উপরের কথা গুলো আক্ষেপের সুরে বলছিলেন ৩ বছর ধরে কাতারে প্রবাসে থাকা লায়েক ইবনে ফাজেল। তার সাথে মুঠোফোনে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের সাথে সোমবার রাত প্রায় ১২টার দিকে। কক্সবাজার সদর মডেল থানার এস আই সুজন চন্দ্র মজুমদার বাদী হয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতের ১৯ নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিকে এজাহারভূক্ত এবং ১৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ৮৯০/২০১৮ নং একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার জিআর মামলা নং-৮৯০/২০১৮। মামলায় ১নং আসামী মোস্তাক আহামদকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়ছে। মামলায় সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়া নিবাসী ফাজেল ইবনে শরীফের পুত্র লায়েক ইবনে ফাজেলকে ৫ নং আসামী করা হয়েছে। মামলায় ঘটনা দেখানো হয়েছে ২৮ অক্টোবর ২০১৮, ভোর সাড়ে ৫টায়। অথচ ৩ বছর ফাজেল সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে আছেন। ফাজেলের প্রশ্ন হলো, “ঘটনা সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, আমি তো ৩ বছর ধরে দেশের বাইরে থাকি। আমি কিভাবে ২৮/১০/২০১৮ ইং এ সংগঠিত ঘটনায় এজাহারভূক্ত আসামী হলাম?” ফাজেলের মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কান্ডজ্ঞানহীন কাজের কারণে বিদেশের মাটিতেও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
টমটম পুড়িয়ে নাশকতা সৃষ্টি করার চেষ্টার অভিযোগে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। “লায়েক ইবনে ফাজেল” নামক তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি’তেও সে এমামলা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
ইতিমধ্যে এ মামলাকে গায়েবী ও বায়বীয় আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান চৌধূরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন। এই “গায়েবী” মামলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।