জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশের মানুষ সকল ক্ষমতার মালিক। দেশের মালিকানা এদেশের সকল মানুষের। কিন্তু এই মালিকানা আজ অনুপস্থিত।

তিনি বলেন, দেশের মালিকানা মানুষকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ঐক্যের প্রয়োজন। এটা দলীয় ঐক্য নয়, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশের মালিকানা ১৬ কোটি মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সিলেটের এই সমাবেশ থেকে আজ সেই ঐক্যের সূচনা হলো।

বুধবার বিকেল সোয়া ৫টায় সিলেট নগরের রেজিস্টারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে জনগণের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও দেশ সকল মানুষের, এটা প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। তাই আমরাও ১৬ কোটি মানুষের অধিকার আদায়ে আজ রাজপথে নেমেছি। একটি স্বাধীন দেশে জনগণের মালিকানা না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না। আমাদের আন্দোলন গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। এই আন্দোলনে সবাইকে অংশ নিতে হবে।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জনগণের দাবি মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে সরকার। কারণ তারা জেনে গেছে মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকার হিসাব দিতে হবে। তারা বিরোধীদলকে দমন-পীড়ন করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে জেলে বন্দি রেখে যেনতেন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যেত চায়। সরকারের এই খায়েশ পূরণ হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করা হয়েছে।

shylet1

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আজ মৃত। গণতন্ত্রের নিম্নতম যে নিয়ামকগুলো থাকা দরকার, তা এখন অনুপস্থিত। দেশে আইনের শাসন নেই। দেশে আছে শুধু বিরোধী মতের মানুষকে দমন-পীড়ন ও নির্যাতন। তাই নির্যাতনকারী সরকারকে বিদায় করে কল্যাণকামী ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচন ও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আজকের এই সমাবেশ।

সরকারকে নভেম্বর মাসের আগেই পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নভেম্বরের আগে পদত্যাগ না করলে ছাল-বাকল থাকবে না। কার ছাল উঠবে টের পাবেন। শুধুমাত্র এক সপ্তাহ অপেক্ষা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা নির্বাচনে যাব। তবে তার আগে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে বেলা ২টায় শুরু হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী ও মহানগর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আজমল বকত সাদেকের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এনামুল হক, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের গণমাধ্যম শাখার সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবীর খান প্রমুখ।