ডেস্ক নিউজ:
মাঝে মধ্যেই মাঝারি ও মৃদু ভূমিকম্পে কাঁপছে বাংলাদেশ। এসব ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল কখনও দেশ থেকে কাছাকাছি দূরত্বে, কখন দেশের ভেতরে। ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণসহ নানান বিষয় পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা অনেকটা একমত যে, বাংলাদেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প মোকাবেলায় আমরা কতটা প্রস্তুত? সেই প্রশ্নের জবাবে নগরবিদসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্প মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি অত্যন্ত দুর্বল। তবে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দাবি, ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলার প্রস্তুতি সঠিক পথেই রয়েছে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষে ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশ এ ধরনের তিনটি প্লেটের মধ্যে অবস্থিত। এ ছাড়া দেশের মধ্যে থাকা চ্যুতি বা ফল্ট লাইনগুলো যেকোনো সময় ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প।

সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁওয়ের আবহওয়া অধিদফতর থেকে ২৯৩ কিলোমিটার উত্তরে ভারতের আসামে। এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩।

ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী প্লেট ও সাব-প্লেট দিয়ে গঠিত। এ রকম দুটি প্লেটের মাঝখানে যে ফাঁক থাকে তাকে বলা হয় ফল্ট লাইন। প্লেটগুলো গতিশীল। দুটি চলন্ত প্লেটের ফল্ট লাইনে পরস্পর সংঘর্ষ হলে অথবা হঠাৎ ফল্ট লাইনে শূন্য অবস্থার সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং মিয়ানমার টেকটনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে। ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটি (১৯৩৪ সালের পর থেকে) দীর্ঘদিন যাবত হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে আছে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের হিসেবে অনুযায়ী, চলতি বছর (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ২০টির মতো ভূমিকম্প হয়েছে, যেগুলোর উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে সাড়ে ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে।

গত ৩০ জানুয়ারি ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নাটোর। ২০১৫ সালে দুটি ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল দেশের ভিতর। ওই বছরের ৯ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, এর কেন্দ্র ছিল ভৈরব বাজার, এ ছাড়া ৮ এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল খুলনার শরণখোলা।

আবহাওয়া অধিদফতরের ভূমিকম্প পরিমাপ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী আবহাওয়াবিদ আতিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভূমিকম্পর ঝুঁকির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ নিয়ে জোন-১। এটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। একটি ফল্ট লাইন এই জোনে রয়েছে। ভারতের ডাউকি ফল্টের কারণেও এই জোনটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। জোন-২-এ রয়েছে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল। এটি হচ্ছে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চল কম ঝুঁকিপূর্ণ, এটি জোন-৩ এর অধীনে।’

তিনি বলেন, ‘৫০০ বছরের ভূমিকম্পের ডাটা বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, এই অঞ্চল এতটা ঝুঁকিপূর্ণ। ভূমিকম্পের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পূর্বাভাস নেই। যেকোনো সময় হতে পারে, এটা মাথায় রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।’

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘হিস্টরিক্যাল ডাটা অ্যানলাইসিস করে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। আগে যে স্থানগুলোতে ভূমিকম্প হয়েছে, পরেও সেখানে হয়েছে। আসাম ও মিয়ানমার ভূমিকম্পের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল, এই অঞ্চলগুলো আমাদের খুব কাছে। এজন্য আমরাও ঝুঁকিতে আছি। এ ছাড়া প্লেটগুলো অবস্থানের বিষয়ও আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ভূমিকম্প পরিমাপের জন্য দশটি স্থানে সিসমোমিটার রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলো থেকে ২৪ ঘণ্টা ডাটা ঢাকার কেন্দ্রীয় অফিসের সার্ভারে আসতে থাকে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘ভারত ও বার্মা (মিয়ানমার) প্লেটের সংযোগ স্থলে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পূর্বাংশ বার্মা প্লেটের মধ্যে, পশ্চিমাংশ ইন্ডিয়া প্লেটের মধ্যে। এমন ভূ-তাত্ত্বিক কাঠামোর মধ্যে ভূমিকম্প হবে এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্প আমাদের দরজায় আঘাত হানতে শুরু করেছে।’

তিনি আরও জানান, এসব অঞ্চলে যে ভূমিকম্পের উৎস রয়েছে সেখানে গত ৪০০ বছরে ৭ এর বেশি মাত্রায় অনেকগুলো ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎস দেশের ভেতরে রয়েছে, দেশের বাইরে উত্তর ও পূর্বেও রয়েছে। দেশের বাইরে কাছাকাছি ও দেশের ভেতরে ভূমিকম্পের উৎস থাকায় যেকোনো সময় বাংলাদেশে ভূমিকম্প হতে পারে। আমাদের ঢাকা একটি অপরিকল্পিত ও জনবহুল নগরী। বড় ধরনের ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থান উৎস থেকে ৫০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে হলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হতে পারে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সরকারের বর্তমানে যে অবস্থা তাতে সরকার বড় ধরনের ভূমিকম্প মোকাবেলায় প্রস্তুত নয়। এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। প্রস্তুতির তো কোনো শেষ নেই। জাপানের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি থাকার পরও এ ধরনের দুর্যোগে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই প্রস্তুতির সঙ্গে তুলনা করলে আমরা তো ধারেকাছেও নেই।’

তিনি বলেন, ‘পুরো শহর জুড়ে মাটির নিচে, মাটির ওপরে গ্যাসের সংযোগ। সেটা ভবনের প্রতিটি তলায় তলায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংযোজিত হচ্ছে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যও সরকারের কাছে নেই। সিদ্ধান্ত ছিল ভূমিকম্প হলে এরিয়া ওয়াইজ গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার সার্কিট ব্রেকার ইন্সটল করে দেয়া হবে। সেটা করা হয়নি।’

ইকবাল হাবিব বলেন, ‘বিপদজনক ভবন চিহ্নিত করে সেগুলো সংস্কার বা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত ছিল। সেগুলো চিহ্নিতকরণের কাজ গত ১৫ বছর ধরে চলছে এবং এমন ভাব যে, তা চলবেই। এমনকি চিহ্নিত ভবনগুলোর বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আমরা বারবার বলেছি কমপ্ল্যায়েন্স কমিশন তৈরি করে প্রতিটি বাড়িতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগের ক্ষেত্রে বছরওয়ারী মেইটেনেন্স এবং যথপোযুক্ততা সার্টিফিকেশন দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। যাতে এগুলো ঠিক থাকে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই।’

বাপা’র যুগ্ম-সম্পাদক আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এ বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম। এলাকাভিত্তিক, ভবনভিত্তিক, জনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক তৈরির একটা কঠিন ব্রত সরকার ঘোষণা করেছিল। তারা যাতে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও বিপদে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারে। কিছু স্বেচ্ছাসেবক তৈরির পর সেটা থেমে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্যোগে কাজ করলেও ফায়ার সার্ভিস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এসব বিষয় যদি দেখেন, তাতে বলা যায় সরকারের প্রস্তুতি খুবই খারাপ।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়য়ের অতিরিক্ত সচিব (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা) মো. মোহসীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘নেপালে যখন ২০১৫ সালে ভূমিকম্প হল সেটা ছিল আমাদের জন্য ওয়েকআপ কল। ১৮৯৭ সালে দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক হয়েছিল। ধারণা করা হয় বড় একটা ভূমিকম্পের জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে ১০০ বছরের মতো লাগে। এ ছাড়া আমাদের দেশের মধ্যে ফল্ট আছে। সবকিছু চিন্তা করে মেগা ডিজাস্টার হিসেবে আমরা ভূমিকম্প নিয়ে অনেক কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্প নিয়ে আমাদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম হচ্ছে। ভূমিকম্পের সেভাবে কোনো পূর্বাভাস নেই, তাই ভূমিকম্প হয়ে গেলে সেটা কীভাবে সামাল দেবো সেই প্রস্তুতিই হচ্ছে মূল বিষয়।’

সরকারের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পের প্রস্তুতি মূলত দুই রকমের- সফট অ্যান্ড হার্ড। হার্ড হচ্ছে কনস্ট্রাকশন ভূমিকম্প সহনীয় করাসহ এ সংক্রান্ত বিষয়, আর সফট হচ্ছে ভূমিকম্পের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। ভূমিকম্প হলে তা সামাল দিতে আমরা গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি এনেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এসওডি সংশোধন করছি, সেখানে ভূমিকম্পকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা ভলেন্টিয়ার বাড়াচ্ছি। সচেতনতার কারণে এখন কিন্তু রডের বিজ্ঞাপনের সময় বলা হয়, এটা ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিটি স্কুলে বছরে দুইবার ভূমিকম্পের মহড়া করা হচ্ছে।’

‘সবকিছু মিলিয়ে আমরা ট্র্যাকের মধ্যে আছি’ দাবি করেন অতিরিক্ত সচিব।

রাজধানীতে তালিকা করা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মোহসীন বলেন, ‘এরমধ্যে কিছু ভবন অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভেঙে ফেলতে হবে, কিছু সংস্কার করতে হবে। সেগুলো বিভিন্ন লেভেলের আছে। দেখেশুনে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে সবাই ন্যায় বিচার পায়।’

তীব্র ভূমিকম্পগুলো :

১৮৬৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভয়াবহ বেশ কয়েকটি ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়। এরমধ্যে ৬ থেকে ৬ মাত্রার বেশি তিনটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশের ভেতরেই।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ১৮৬৯ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতে (কেন্দ্র) ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এরপর ১৮৮৫ সালে সিরাজগঞ্জে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।

১৮৯৭ সনের ১২ জুন ৮ দশমিক ৭ মাত্রার ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক’ ভারতবর্ষে আঘাত হানে। এটা আজও পৃথিবীর অন্যতম বড় ভূমিকম্প হিসেবে পরিচিত। এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভারতের শিলং শহরের কাছে, তবে এর প্রভাব বর্তমান বাংলাদেশসহ বহু দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সে সময়ের ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন মিশনারীদের বিল্ডিং ভেঙে পড়েছিল এই ভূমিকম্পের কারণে। এ ছাড়াও ঢাকায় ৪৫০ জনের মতো নিহত হবার খবর পাওয়া গিয়েছিল।

এরপর ১৯১৮ সালের ৮ জুলাইয়ে দেশে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গল।

১৯৩০ সালের ২ জুলাই ভারতে (কেন্দ্র) ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৯৫০ সালের ১৫ আগস্ট আসামে হয় ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প। ১৯৫৪ সালের ২১ মার্চ ভারতের মনিপুরে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।

ভারতের আসামে (কেন্দ্র) ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয় ১৯৭৫ সালের ৮ জুলাই। ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের সিকিমে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র বাইরে হলেও তীব্র কম্পন অনুভব করে বাংলাদেশ।

১৯৯৭ সালের ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের মহেশখালী দ্বীপ।

ভূমিকম্পের সময় করণীয় :

>> ভূমিকম্প অনুভূত হলে আতঙ্কিত হবেন না।
>> ভূকম্পনের সময় বিছানায় থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত কোনো আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিন।
>> রান্না ঘরে থাকলে গ্যাসের চুলা বন্ধ করে দ্রুত বেরিয়ে আসুন।
>> বিম, কলাম ও পিলার ঘেঁষে আশ্রয় নিন।
>> শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে স্কুলব্যাগ মাথায় দিয়ে শক্ত বেঞ্চ অথবা শক্ত টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।
>> গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল, মার্কেট ও সিনেমা হলে থাকলে বের হওয়ার জন্য দরজার সামনে ভিড় কিংবা ধাক্কাধাক্কি না করে দুহাতে মাথা ঢেকে বসে পড়ুন।
>> ভাঙা দেয়ালের নিচে চাপা পড়লে বেশি নড়া চড়ার চেষ্টা করবেন না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন, যাতে ধুলাবালি শ্বাসনালিতে না ঢোকে।
>> একবার কম্পন হওয়ার পর আবারও কম্পন হতে পারে। তাই সুযোগ বুঝে বের হয়ে খালি জায়গায় আশ্রয় নিন।
>> ওপর তলায় থাকলে কম্পন বা ঝাঁকুনি না থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে; তাড়াহুড়ো করে লাফ দিয়ে বা লিফট ব্যবহার করে নামা থেকে বিরত থাকুন।
>> কম্পন বা ঝাঁকুনি না থামলে সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়ুন এবং খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিন।
>> গাড়িতে থাকলে ওভার ব্রিজ, ফ্লাইওভার, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভূকম্পন না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভিতরে থাকুন।
>> ব্যাটারিচালিত রেডিও, টর্চলাইট, পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম বাড়িতে রাখুন।
>> বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করুন।