প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী চেয়ারম্যানের মামলা প্রত্যাহার ও নি: শর্তে¦ মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে চেয়ারম্যান মাস্টার মো. উল্লাহর ম্মৃতিস্মারণ করতে গিয়ে অঝোঁরে কাঁদলেন বক্তরা। উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ’র মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত্বে মুক্তির দাবীতে ২ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকাল ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাতারবাড়ী নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিশাল মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মুুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার সঞ্চালনায় এ মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রায় ১০ হাজার নারী-পুরুষের সমাগম ঘটেছে। তখন উত্তাল হয়ে উঠে মাতারবাড়ী। মানববন্ধনটি ইউনিয়নের রাজঘাট থেকে পুরান বাজার পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে নিরবের সাথে নারী-পুরুষরা দাঁড়িয়ে হাতে পোষ্টার পেস্টুন ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তখন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষেরা চেয়ারম্যানের মুক্তি চাই দিতে হবে স্লোগান স্লোগানে মূখরিত করে তুলেন পুরো মাতারবাড়ী। মানবন্ধনে অংশে নেয়া বক্তরা বলেন, চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহর জনপ্রিয়তা দেখে ও থাকে ঠপকিয়ে উপরে যেতে না পারায় প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক কূশীলদের ইন্ধানে স্থানীয় জিয়াবুল হত্যা মামলায় চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।

উক্ত ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় চেয়ারম্যান জামিন নিলে পরর্তীতে চেয়ারম্যান হাই কোটের নির্দ্দেশে নি¤œ আদালাতে গিয়ে তার আইনজীবিরা জামিনের প্রার্থনা করলে তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। তিনি জেলে যাওয়ার পর থেকে কিছু স্বার্থন্বেষীমহল এলাকায় একের পর এক আইনশৃখংলার বিঘœ ঘটাচ্ছে। এতে সাধারণ জনগনের প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়েছে। চেয়ারম্যানের নিরহ আত্মীয় স্বজনদের পথে পথে ও কক্সবাজার শহরের বাদী পক্ষের দাপুটে লোকজন প্রাণনাশের ও হেনস্থ করার হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া ২টি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিনের মালিকরা তাদের টাকা উত্তোলন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করতে পারছেন না।

বক্তরা আরো বলেন, চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তারা স্বকৌশলে স্থানীয়দের চাকুরীচুৎ করে বহিরাগতদের নিয়োগ দিচ্ছেন। প্রকল্পের জন্য নির্মিত বিভিন্ন অবকাঠামো স্থানীয় ঠিকাদারদের না দিয়ে তাও বহিরাগতদের কাজ দিচ্ছে। অপরদিকে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে হারিয়ে দেয়ার জন্য জামায়াত বিএনপির কিছু এজেন্ডা মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহকে জিয়াবুল হত্যা মামলায় আসামী করেছে।

উক্ত হত্যা মামলা থেকে অচিরে চেয়ারম্যানের মুক্তি দাবী জানিয়েছেন। মানবন্ধনে অংশে নেয়া নারী-পুরুষ তথা মাতারবাড়ী বাসীকে প্যানেল চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে সালাম জানিয়েছেন এবং দোয়া করতে বলেছেন কারান্তরীণ চেয়ারম্যান মো. উল্লাহ। চেয়ারম্যানের বিভিন্ন গুণাগুণ তুলে ধরতে গিয়ে প্যানেল (চেয়ারম্যান) মুজিবুর রহমান ও সাবেক যুবলীগ নেতা আব্দু ছত্তারসহ অনেকে চেয়ারম্যানের শূন্যতার শোকে ও তার উপকারের কথার স্মৃতি স্মারণ করতে গিয়ে কেঁদেছেন অঝোঁরে। যারা মানুষকে শান্তনা দেওয়ার কথা তারা কেঁদেছেন। বক্তব্য করার এ পর্যায়ে আবার কান্না আবার থমকে যায়। এভাবে চলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। এই কথা তারা মুখে না বললে ও চোখে ফুটে উঠেছে বেদনার ছাপ।

এসময় উপস্থিত নারী-পুরুষরাও কাঁদলেন। অপরদিকে মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব বশির আহমদ, বিশিষ্ট চিংড়ি ও লবণ ব্যবসায়ী আওয়ামীলীগ নেতা কাউছার সিকদার, সাবেক যুবলীগ নেতা ও বিশিষ্ট ঠিকাদার আব্দু ছাত্তার, ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (চেয়ারম্যান) ও মানবন্ধন কমসূচীর অনুষ্টানের সভাপতি মুজিবুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা আল মুজিব উদ্দিন রিপন, ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্যা ছকুনতাজ, মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রশিদ, ছাত্র নেতা তারেক প্রমূখ।

এদিকে চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে মাতারবাড়ী কৃষকলীগের সভাপতি ও বিশিষ্ট ঠিকাদার আবু ছালেহ এবং ডা: শাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় ২ হাজার নারীÑপুরুষ ব্যানারও পোষ্টার নিয়ে দীর্ঘ পথ হেটেঁ মগডেইল থেকে এসে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানব বন্ধনের অংশ নেন। সাবেক ইউপি সদস্য আলহাজ্ব বশির, প্যানেল চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ও আব্দু রউফ মেম্বারের নেতৃত্বে বিশাল একটি মিছিল এসে নতুন বাজারে গণ জমায়েত হয়। অন্যদিকে রিয়াজ উদ্দিন মেম্বারের নেতৃত্বে রাজঘাট থেকে বিশাল একটি মিছিল এসে আইডিয়াল স্কুলের সামনে গণ জমায়েত হয়। তা ছাড়া বিশিষ্ট ঠিকাদার আব্দু ছাত্তার, শানিক ও টিপু সার্বক্ষনিক মানব বন্ধনটি তদারকি কাজে লিপ্ত ছিলেন। এসময় আ’লীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীও মানববন্ধানে অংশ গ্রহণ করেন। এই বিশাল মানববন্ধনটি মাতারবাড়ী তথা মহেশখালীবাসীর জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। তবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের আইসি আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যাক পুলিশ নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা ছিল পুরো মাতারবাড়ী। মানবন্ধনে বক্তারা নি¤েœয় বক্তব্য মুহু মুহু তুলে ধরেন।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন

যারা জিয়াবুল কে হত্যা করেছে তারা বিভিন্ন ডাকাতি, চুরিসহ সমাজের বিভিন্ন অপরাধ কর্মে জড়িত থাকার দায়ে গত ১ বছর পূর্বে চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ নেতৃত্বে একটি রেজুলেশন করেছিল। রেজুলেশন করার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে রেজুলেশনের কপি প্রেরণ করেছিল বলে জনশ্রুতি আছে। ঐ আসামীদের সাথে জিয়াবুল হত্যার ঘটনায় উক্ত চেয়ারম্যান কে আসামী করায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

চেয়ারম্যান কে আসামী করার কারণঃ? মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের বিচার কার্য বেশী ভাগই নিহত যুবলীগ নেতা জিয়াবুলের ছোট ভাই ছরওয়ার মেম্বার কে দায়িত্ব অর্পন করতো বর্তমান চেয়ারম্যান। কারণ ছরওয়ার মেম্বার চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহর বিশস্থ একজন ইউপি সদস্য ও কাছে লোক ছিলেন। এ ছাড়া নিহত জিয়াবুলের পরিবার গেল নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান কে সার্বিক সহযোগীতা করেছিল। এ কারণে উক্ত পরিবার ছিল চেয়ারম্যানের প্রাণের লোক। অথচ যারা জিয়াবুল কে হত্যা করেছিল তারাই চেরম্যানের চির শত্রুু। কিন্তু ছরওয়ার মেম্বারের এলাকা মাইজ পাড়ার দানু নামের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে উত্তম-মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা কে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান ও মেম্বার ছরওয়ারের মধ্যে বাঁক বিতন্ডতার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মধ্যে দু’দফা ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকলেও এলাকা বাসীর হস্তক্ষেপে নিরসন হয়ে যায়। তবে ছরওয়ার মেম্বার রাগ- অভিমান করে ইউনিয়ন পরিষদ বর্জন করে। তা আদৌ বিদ্যমান।

এলাকাবাসী ও সুশীল সমাজ মনে করেন চেয়ারম্যান কে এ ঘটনার রেষ ধরে চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়েছে। উল্লে-খ্য, গত ১৫ আগষ্ট বিকেল ৪ টার সময় উপজেলার মাতারবাড়ী বাংলাবাজার এলাকায় চিংড়ি প্রজেক্টের বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজনের হাতে নিহত হয় মাতারবাড়ী হংসমিয়াজী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ফরিদ আহমদের পুত্র স্থানীয় যুবলীগ নেতা জিয়াবুল করিম। ওই সময় চেয়ারম্যান মো. উল্লাহ ১৫ আগষ্ট শোক দিবসের সভায় মহেশখালী উপজেলা সদরে ছিলেন বলে সে সময় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছিল।