শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

ঘরে নতুন মিটার এসেছে, বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি কিন্তু মাসের শেষে লিখে নিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিল! ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার সদর উপজেলার ৪নং ঈদগাঁও ইউনিয়নের কালিরছড়া ভুতিয়া পাড়ায় ৫ পরিবারে। আর বিদ্যুৎ বিল লিখে যাওয়ায় কিংকর্তব্যবিমুঢ় ওই গ্রাহকরা। সরেজমিন ও প্রাপ্ত তথ্যে গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত ১৭ সালের মার্চ মাসের দিকে বর্নিত এলাকার ৫জন গ্রাহক নতুন সংযোগের জন্য কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে আবেদন করেন। এদিকে একই বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ৫জন গ্রাহকের জন্য নতুন সংযোগের সমস্ত কাজ সম্পর্ন করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। লাগানো হয় নতুন মিটার, অপেক্ষা শুধু বাল্ব জালানো।এরই মধ্যে শুরু হয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের চলচাতুরী। বিদ্যুৎ আসতে ৫ মেঃওঃ ট্রান্সমিটারের প্রয়োজন। দিতে হবে অধিক টাকা। এরই মধ্যে টাকা না দেওয়া দীর্ঘ ৯ মাস ঝুঁলে আছে সমস্যাটি। টাকা না দেওয়ায় বিদ্যুতের দেখা পাচ্ছে না পরিবার গুলো। নতুন মিটার দেখে আনন্দিত হলেও বাল্ব জ্বালাতে না পেরে হতাশ তারা। তবে গ্রাহকরা প্রতিমাসে বিল লিখে যাওয়ার দৃশ্য দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সে-ক্ষেত্রে তাদের কোন বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেওয়া হয় না। ফলে পরবর্তীতে চরম ভোগান্তি ও অধিক টাকা পরিশোধ করার শংকায় রয়েছে। গ্রাহকের ধারনা প্রতিমাসে ডিমান্ড চার্জ ১৫ টাকা, সার্ভিস চার্জ ১০ টাকা, ভ্যাট ৫ টাকা, মিটার ভাড়া ১০ টাকাসহ মোট ৪০ টাকার বিল প্রস্তুত করে নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে মিটার রিডিং শূন্য সেখানে বিদ্যুৎ বিলের টাকা কিভাবে নির্ণয় করা হলো, সংযোগ ছাড়া সার্ভিস চার্জ ১০ টাকাই বা কিভাবে বিল প্রস্তুত করে নিয়ে যাচ্ছে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে এলাকাবাসী। ইউনিয়নের ভুতিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন, শিমুল, সেলিম, বেদার মিয়া, জয়নাল অভিযোগ করে বলেন- প্রায় ৯ মাস পূর্বে আমাদের মিটার বোর্ডে মিটার স্থাপন করলেও সংযোগ প্রদান করেনি। আমরা সংযোগ প্রদানের কথা বললেও মিটার স্থাপনকারীরা বলেন, পরে সংযোগ প্রদান করা হবে। আর যখন সংযোগ প্রদান করা হবে তার পরের মাসে বিদ্যুৎ বিল আসবে। এখন দেখি যে মাসে মিটার স্থাপন করা হয়েছে ওই মাসে সংযোগ প্রদান ছাড়াই ৪০ টাকা করে বিদ্যুৎ বিল লিখে নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে কোন আমাদের বিল দিতে হবে কি না এমন সন্দেহ পোষণ করছে তারা। স্থানীয়রা জানান, সরকার প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের লক্ষ্যে যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে ওই প্রকল্প থেকে কালির ছড়া ভুতিয়া পাড়ায় শতাধিক পরিবারকে নতুন সংযোগের আওতায় আনা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল উপস্থিত থেকে ওই লাইনের নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন কালে শতাধিক পরিবারে সংযোগ প্রদান করা হলেও দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ১০ পরিবারে বিদ্যুতের মিটার প্রদান করা হয়। এর মধ্যে এ ৫ গ্রাহকের মিটার বোর্ডে মিটার স্থাপন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে সংযোগ প্রদান করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ঐ প্রকল্পের অধীনে এই গ্রামের বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের মাস্টার প্ল্যানে যেসব পরিবারের নাম রয়েছে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে আসছে মইনুল ইসলাম নামের এক ঠিকাদার। মাঝে মধ্যে তারপক্ষ হয়ে সুপার ভাইজার আক্তার, মেকানিক রহিমও টাকা দাবী করে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক জানায়। এব্যাপারে মইনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কয়েকবার রিং দেওয়া হলেও সংযোগ না পাওয়া বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে ঈদগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এরিয়া ম্যানেজার শিমুল মল্লিক জানান, বিষয়টি আমার নজরে ছিল না। শনিবার অফিসে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।