বাংলানিউজঃ

সমুদ্র নগরী কক্সবাজারের নিরাপত্তায় শহরের ৪০টি পয়েন্টে ৫২টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কক্সবাজার পৌরসভার অর্থায়নে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নির্মিত হয়েছে সিসিটিভির কন্ট্রোল রুম। ফুটেজ পর্যবেক্ষণের জন্য লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার (০৩ আগস্ট) বেলা ১২টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে সিসি ক্যামেরাগুলোর উদ্বোধন করবেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, মনিটরিং ভবণ নির্মাণ, ক্যাবল সংযোগ ও লোকবল নিয়োগ শেষ হয়েছে। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক যাত্রার অপেক্ষা। আশা করছি শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত ধরেই নতুন দিগন্তে পা রাখবে পর্যটন নগরী।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, কক্সবাজার পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অলিগলিসহ সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউপির লিংকরোড পর্যন্ত দেড় শতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। আপাতত কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ৪০টি পয়েন্টে ৫২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

স্থাপিত ক্যামেরাগুলো হলো- বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্স ও সিএনজি পাম্প, কক্সবাজার কারাগার, স্টেডিয়ামের সামনে ও মোহাজের পাড়ার মোড়ে, সদর হাসপাতালের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের মোড়ে, জেলা শিক্ষা  অফিসের সামনে (সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়), গোলদিঘীর পাড়ের দক্ষিণ মোড়, অগগমেধা ক্যাং (বৌদ্ধ মন্দির) সড়কে, বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের উত্তর মোড়ে, বড় বাজার সামনে মোড়ে (বাজারঘাটা), ভোলাবাবুর পেট্রোল পাম্প, লালদিঘীর পূর্বপাড় মসজিদের সামনে, পৌরসভার সামনে, গুনগাছ তলা (শ্যামলী কাউন্টারের পাশে), বিমানবন্দর গেটের সামনে, ঝাউতলা হোটেল রোঁনেসার সামনের যাত্রী ছাউনিতে, হলিডের মোড়ের যাত্রী ছাউনির সামনে, পিটিআই স্কুলের সামনের মোড়ে (পিডিবির সামনে), আরআরআরসি অফিসের সামনে (বাণিজ্য মেলার মাঠ), লাবণীর মোড়ের যাত্রী ছাউনি, কল্লোল মোড়, হান্ডি রেস্টুরেন্টের মোড়,  সি ইন পয়েন্ট ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স, সুগন্ধার মোড় (ড্রাগন মার্কেটের সামনে), কলাতলীর পেছনের মোড় (সি ক্রাউনের সামনে), কলাতলীর মোড়,  হোটেল সি প্যালেসের উত্তর ও দক্ষিণ পাশ, সুগন্ধা পয়েন্ট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, লং বিচের পাশে (মোহাম্মদীয়া হোটেল সামনের পশ্চিম পাশ), নিরিবিলি অর্কিডের এটিএম বুথের পাশে), সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে (কটেজ জোনের পাশে) জাম্বুর মোড়,  গোলচত্বর মোড়ের দক্ষিণ পাশে (ইউএনএইচসিআর’র পেছনের রাস্তা), পাসপোর্ট অফিসের সামনে, সার্কিট হাউস গেট, পুলিশ সুপার বাসভবনের সামনের মোড়, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র আফরাজুল হক টুটুল বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার অর্থায়নে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মনিটর, টেলিভিশন, ক্যাবল তারসহ অন্যান্য খরচ দিয়েছে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিকসহ ব্যাংক বিমা কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরো বলেন, অপরাধীরা এমনিতেই মানসিকভাবে দুর্বল প্রকৃতির হয়। সমাজ ও আইনকে ফাঁকি দিয়েই তারা সচরাচর অপরাধ করে।  সিসিটিভি’র কারণে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অপরাধী অপরাধের অন্ধকার পথ ছেড়ে দেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একে. এম ইকবাল হোসাইন বলেন, অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীদের পাকড়াও এবং প্রকৃত অপরাধীকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো এখন থেকে কক্সবাজারে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার হবে। এই লক্ষ্যেই গত বছরের শেষ দিকে শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনতে ২৫ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটিই সব ব্যয়ভার বহন করেছে।

তিনি আরো বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতেই শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। ভবনের সামনে সিসিটিভি স্থাপন করে এর সংযোগ জেলা পুলিশ মনিটরিং রুমে দেওয়ার জন্য তিনি জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।