ডেস্ক নিউজ:

জীবন আহমেদ। পেশায় ফটো সাংবাদিক। অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট ছিল বৃষ্টির ছবি তোলার। টিএসসি এলাকায় লেন্স তাক করে ঘুরছিলেন। কোনো ছবিই মনঃপূত হচ্ছে না।

হঠাৎ চোখে পড়লো একটি দৃশ্য। আকাশী-সাদা পোশাক পরা এক জুটি বৃষ্টিতে ভিজছেন। বৃষ্টির দিনে খুব স্বাভাবিক দৃশ্য এটি। তারপরও চোখ আটকে যায় জীবন আহমেদের। কারণ, ভালোবাসার চুমুতে ভালোবাসাবাসিতে তারা।

পরিষ্কার দিনের আলোয়, প্রকাশ্য চুমুতে ভালোবাসা এদেশে স্বাভাবিক দৃশ্য নয়। নির্মল, বিশুদ্ধ ভালোবাসা বিনিময়ের দুর্লভ দৃশ্য দেখে জীবনের আলোকচিত্রী সত্ত্বা জেগে উঠলো।

লেন্স বাগিয়ে ছবি তুললেন। ছবি পাঠালেন অফিসে। পোস্ট করলেন নিজের ফেসবুক ওয়ালে। ক্যাপশন দিলেন, “বর্ষামঙ্গল কাব্য… ভালোবাসা হোক উন্মুক্ত।” তারপর ইতিহাস! ছবিটা বৃষ্টির পানির মতো উপচে পড়তে থাকে ফেসবুকের হোমপেজে। জীবন আহমেদের আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া ছবিতেই পাঁচঘণ্টায় লাইক পড়ে ছয় হাজার। আড়াই হাজার শেয়ারের পাশাপাশি হাজারের উপরে কমেন্ট।

জীবন আহমেদ
হাজার হাজার মানুষ ছবিটি ডাউনলোড করে পোস্ট দেন নিজ নিজ আইডি থেকে। কেউ ছবিটাকে সাহসী ও সত্য, নির্মল ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ দেখছেন নোংরামি হিসেবে।

পুরো বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন জীবন আহমেদ? চ্যানেল আই অনলাইনকে বললেন, কে কীভাবে নিলো সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মতামত থাকতেই পারে। যেকোনো ছবির ভালো খারাপ দুটি দিকই থাকে। যে যেভাবে গ্রহণ করে। তবে এই ছবি বেশির ভাগ মানুষই ভালোভাবে গ্রহণ করেছে, এবং নির্মল ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছে।

জীবন আহমেদ বলেন, প্রকাশ্য ভালোবাসায় নোংরামি থাকতে পারে না। ছবিটা দেখলে খেয়াল করবেন, তাদের শরীরী ভাষায় শুধুই ভালোবাসা এবং তাদের সততার বিষয়টাও স্পষ্ট।

‘ভালোবাসা বিশুদ্ধ এবং প্রকাশ্যই হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এই ছবিও জীবন আহমেদের তোলা।
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার সময় জীবন আহমেদ ছবিটি ট্যাগ দেন প্রচ্ছদ শিল্পী চারু পিনটুকে। এতে করে অনেকে মনে করেন ছবির পুরুষ লোকটা চারু পিনটু। জীবন আহমেদ জানান, ছবির লোকটা চরু পিনটু নন। ছবি তোলার সময় চারু পিনটু তার সঙ্গে ছিলেন বলেই তাকে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব-পশ্চিম নামে একটি পোর্টালের ফটো সাংবাদিক জীবন এর আগে কাজ করেছেন ইত্তেফাক, বাংলার চোখ, নিউজ নেক্সট বাংলাসহ বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমে।

জীবন আহমেদ এর আগেও বেশ কিছু আলোচিত ছবি তুলেছেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকের সামনে আঙ্গুল নাচিয়ে হুমকি দেওয়ার ছবি, অভিজিৎ রায়ের রক্তাক্ত ছবিসহ বেশকিছু ছবি এর আগে ভাইরাল হয়েছে। তবে এই ছবিটি আগের সব ছবিকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান তিনি। সূত্র : চ্যানেল আইন অনলাইন