শাহেদ মিজান, সিবিএন:

আজ সোমবার রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থীদের সব ধরণের প্রচারণা। নির্বাচনী আইনের বিধি মতেই সকল ধরণের প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। সে হিসেবে আজ রাত ১২টায় প্রায় একমাসের প্রচারণাযুদ্ধ শেষ হবে। সেই সাথে ভোট গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে সাথে নিয়ে নির্বাচন কমিশন যাবতীয় প্রস্তুতির জন্য কাজ করবেন। আগামীকাল সব ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সব সরঞ্জাম পৌঁছানো হবে। সেই সাথে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ভোট কেন্দ্রে চলে যাবেন। আজকের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কমর্কর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য মতে, দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইনী জটিলতায় পড়ে ২০১০ সালের নির্বাচনে মেয়র-কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ বিলম্ব হওয়ায় এই বিলম্ব হয়েছে। সর্বশেষ — নির্বাচন কমিশন তপশীল ঘোষণা করেছেন। তপশীল ঘোষণার পর নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়। প্রার্থীতার নিশ্চিতের পর ৪ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে পাঁচ মেয়র, ১৭ সংরক্ষিত ও ৬৪ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৮৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হন।

এতে মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মুজিবুর রহমান (নৌকা), বিএনপির মনোনিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (ধানের শীষ), জামায়াত সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র (বরখাস্ত) সরওয়ার কামাল, জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী রুহুল আমিন সিকদার (লাঙ্গল) ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা জাহেদুর রহমান (হাতপাখা)। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ১৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৬৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

পৌরসভার ১২ ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ৮৩ হাজার ৭২৮জন। এতে পুরুষ ভোটার ৪৪ হাজার ৩৭৩ জন ও মহিলা ভোটার ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন।

মাঠের জরিপে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মুজিবুর রহমান (নৌকা), বিএনপির মনোনিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (ধানের শীষ), জামায়াত সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র (বরখাস্ত) সরওয়ার কামাল। মূল লড়াই এই তিন প্রার্থীর মধ্যেই হবে। তাই এই তিন প্রার্থীকে নিয়েই ভোটারদের মাতামাতি শুরু শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে। সরকার দলীয় প্রার্থী হিসেবে মুজিবুর রহমান, আরেক বৃহৎ দল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রফিকুল ইসলাম এবং বর্তমান মেয়র এবং জামায়াত ও স্বতন্ত্র ভোট দেখে সরওয়ার কামালও সমান এগিয়ে আছেন। বিশেষ করে কক্সবাজারে অবস্থানরত লোহাগাড়-সাতকানিয়ার লোকজনের ভোট সরওয়ার কামালের দিকে বলে দাবি তাদের।

মেয়র প্রার্থী সব প্রার্থীরা তুমুল প্রচারণা চালিয়েছেন। নেতাকর্মী, সমর্থকদের সাথে নিয়ে মেয়র প্রার্থীরা শুরু থেকে অবিরাম প্রচারণা চালিয়ে এসেছেন। সেই সাথে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসে প্রচারণা চালিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে অবিরাম প্রচারণা চালিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল। তবে সব প্রার্থী শেষ মুহুর্তে এসে কয়েকদিন নিঘুম প্রচারণা চালিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এবং ভোটে অনিয়ম করতে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন ষড়যন্ত্র করছে বলে কয়েকদিন অভিযোগ করে আসছেন বিএনপি ও নাগরিক কমিটির প্রার্থী সরওয়ার কামাল। এর অংশ পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বাসায় হানা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। এই নিয়ে দু’দফা সংবাদ সম্মেলন করেছেন এই দু’প্রার্থী।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘১০জুন তফশীল ঘোষণা পর থেকে আগ্রহী প্রার্থীরা নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। তবে নির্বাচনী বিধি মতে ৪ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামেন। সেই একটানা ২০দিন প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়েছেন। প্রচারণার সময় কাল (আজ) ১২টায় শেষ হবে। সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথে সব প্রার্থীকে সব ধরণের প্রার্থীকে প্রচারণা বন্ধ করতেই হবে। না করলে আচরণ বিধি লঙ্ঘন হবে এবং তার জন্য আইন মতে শাস্তি ভোগ করতে হবে।’