বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার শহরের কলাতলির পর্যটন ব্যবসায়িকে মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সন্তানের ভবিষ্যৎ এবং পুরো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ নিয়ে শংকিত পরিবারটি। শুধুমাত্র পুলিশের কাছে ভিকটিমের টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো টাকা না দিয়ে পর পর ২টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় আসামি করা হয়েছে উক্ত ব্যবসায়িকে এমটাই দাবি পরিবারের। সন্তানের নিদোর্ষ দাবি করে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছে অসহায় মা।
মিথ্যা মামলার শিকার নোমানুল হক সাজিম জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ কলাতলির সৈকত পাড়ায় আমার অসুস্থ মাসহ স্বপরিবারে বসবাস করে আসছি এবং ২০০৪ সাল থেকে ট্যুরিজম ও হোটেল ব্যবসার সাথে জড়িত এবং আমি রাজবীর রিসোর্ট এর মালিক হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ২০০৪ সাল হতে আমার ব্যবসার যাবতীয় ভ্যাট এবং পৌরকর পরিশোধ করে আসছি। গত ২১ জুন আমার হোটেল (রাজবীর রিসোর্ট) এর সহকারী ম্যানেজার সাগরকে আমার হোটেলের সামনের রাস্তা থেকে রাত আনুমানিক ১০ টার সময় মডেল থানার পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমার হোটেলের অন্য একজন ম্যানেজার থানায় গিয়ে অপারেশন অফিসার মাইন উদ্দীন এর সাথে দেখা করেন এবং কি অপরাধে ম্যানেজার সাগরকে আটক করা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন কারণ নেই তবে সাগরকে ছাড়া যাবে না। সহকারী ম্যানেজার সাগরের পকেটে হোটেলের রিজার্ভেশনের দুই দিনের ৩১,৫০০ টাকা এবং তার ব্যক্তিগত ৪,০০০ টাকা নিয়ে ফেলে। উক্ত টাকা ফেরত চাইলে মাইন উদ্দীন বলেন জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে দিয়ে দিবে। পরের দিন ২২ জুন সাগরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। পরে ১ জুলাই ম্যানেজার সাগর আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে। পরেরদিন সাগর এবং অন্য একজন ম্যানেজার থানায় উপস্থিত হয়ে গৃহিত টাকা পুলিশ কর্মকর্তা মাইন উদ্দীনের কাছ থেকে ফেরত চাইতে গেলে তিনি হোটেলের মালিক সাজিমকে আসতে বলেন। গোপনসূত্রে আমি জানতে পারি ২৬ আমার বিরুদ্ধে (২ টি জি.আর ) ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় আমাকে ডাকাত বানিয়ে ৭ নং আসামি করা হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ি সাজিম জানান, আমার ম্যানেজোরের পকেটের টাকা চাইতে গিয়ে যদি আমাকে ডাকাত বানিয়ে আসামি করা হয় তাহলে আমার বেঁচে থাকার কোন মানে হয়না। সরকারের সমস্ত কর ভ্যাট দিয়ে হালাল ভাবে ব্যবসা করতে গিয়ে যদি কোন অপরাধ না করে ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ২টি মামলার আসামি হয়ে পলাতক হতে হয় তাহলে আমরা কোন দেশে বাস করছি।
মিথ্যা মামলার শিকার সাজিমের মা হাফেজ জমিরুল কাদেরের স্ত্রী জুবাইদা ইয়াসমিন জানান, আমি মামলা হওয়ার খবর জানার পরে পুলিশ সুপার এর কাছে এর প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে যায়। তিনি ছুটি থাকার কারণে সহকারী পুলিশ সুপার এর কাছে ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করি। আমার ছেলে সাজিমের বিরুদ্ধে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষের কেউ একজন কোনরূপ খারাপ মন্তব্য পর্যন্ত করলে এবং খারাপ বলে অবহিত করলে আমি আইনগত সকল শাস্তি স্বেচ্ছায় মাথা পেতে নেব। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আমি মনে করি আইনের উর্ধে কেউ না। আমার ছেলে যদি অপরাধি হয় তার শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। কিন্তু কোন কারন ছাড়া কিভাবে আমার ছেলেকে ডাকাত বানিয়ে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হলো এর পেছনে কারা জড়িত সব তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশের উর্ধতন মহলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন মা জোবাইদা।
এদিকে মিথ্যা মামলার শিকার সাজিমের বিষয়ে তার এলাকার মান্যগন্য ব্যক্তি এবং প্রতিবেশি বিশেষ করে কলাতলির সৈকতপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি শরাফত উল্লাহ বাবুল, পাশের কয়েকজন ব্যবসায়ি কবির সওদাগর, হামিদুল হক সওদাগর, শিমুল শর্মা, এজাহার কোম্পানী, শংকর বড়–য়া জানান, সাজিম অনেক বছর যাবৎ ট্যুরিজম ব্যবসা এবং আবাসিক হোটেল ব্যবসা করছে কিন্তু কোন দিন ডাকাতি কিংবা কোন চাঁদাাবাজি করেছে এমন খবর শুনিনি। তার বিরুদ্ধে হয়ত কেউ পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আসামি করতে উস্কানি দিয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে করা ২টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করছি। মামলা মানে একটি পরিবারের যন্ত্রনা। আশাকরি প্রশাসন তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষিদের শাস্তি দিয়ে নিরপরাদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেবেন।
এদিকে সাজিমের কটেজের ম্যানেজার সাগরকে আটকের সময় জমা নেয়া ৩১ হাজার ৫শ টাকা বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার মডেল থানার অপারেশন অফিসার মাঈন উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উদ্দিন খন্দকারকে মিথ্যা মামলা ও গৃহিত টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। তবে সত্যি যদি এ ধরনের কিছু হয় তাহলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সাজিমের অভিভাবকের সাথে বলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ও জানান।
ঈর্যটন ব্যবসায়ি সাজিমের বিরুদ্ধে করা ২টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার সঠিক তদন্ত পূর্বক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের আকুল আবেদন জানিয়েছেন সাজিমের অসুস্থ মা জোবাইদা ইয়াছমিন।