হাবিবুর রহমান সোহেল, নাইক্ষ্যংছড়ি:

রামুর কচ্ছপিয়া বিট কর্মকর্তা বহুল আলোচিত সমালোচিত তপন মল্লিকের বিরুদ্ধে আবারও সমাজিক বনায়নের গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত কাল রবিবার ১৫ জুলাই কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবরে কচ্ছপিয়া সমাজিক বনায়নের ১৪ জন উপকার ভোগী বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অভিযোগটি আমলে নিয়ে তার অধিনস্থ কর্মকর্তা এসিএফ ও রেন্জ কর্মকর্তা কে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কচ্ছপিয়ার বিট কর্মকর্তা তপন মল্লিক ২০০৭-২০০৮ সনে রোপনকৃত বাগান হইতে গাছ কর্তন করে হাজার হাজার গন ফুট গাছ বিক্রি করেছে। আরো অভিযোগ আছে ওই তপন সামাজিক বনায়নের শতাধিক সদস্যের কাছ থেকে গাছ কাটার অজুহাতে ২ হাজার টাকা করে আদায় করে। এই দিকে কচ্ছপিয়ায় দিন-রাত সমানতালে কাঠ পাচারের মহোৎসবে পরিনত হয়েছে কচ্ছপিয়ার বিট অফিসার তপন কান্তি মল্লিকের নেতৃত্বে বিশাল একটি সিন্ডিকেট।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, রামুর কচ্ছপিয়ার ঘাটে- ঘাটে চাদাঁ আদায় করে এসব কাঠ বোঝাই গাড়ি পাচারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করছে ওই বিট অফিসের চাদাঁবাজ চক্র। বন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ম্যানেজ করে জঘন্য কাঠ পাচারের মহোৎসব চললে ও দেখার কেউ নেই বলে জানান একাধিক ভোক্তভোগী। বন প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা -কর্মচারীদের সীমাহীন নির্লজ্জ কাঠপাচারে সহায়তা জ্যামিতিকহারে বনের বনারন্য হাজার হাজার একর সরকারী বন এখন ধু-ধু মরুভুমিতে পরিনত হয়েছে। কচ্ছপিয়ায় বিট কর্মকর্তা ওই তপন সহ শতাধিক জনের বনদস্যুর একটি শক্তিশালী সিন্টিকেট বিভিন্ন রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চলতি তামাক মৌসুমে তামাকচুল্লিতে ব্যবহারের কাঠ যোগান দিচ্ছে।

এব্যাপারে চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক জগলুল হোসেন এ প্রতিবেদক কে বলেছেন কচ্ছপিয়া বন বিটের আওতাধীন সংরক্ষিত রক্ষিত বনাঞল সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট বন প্রশাসনে দায়িত্বে নিয়োজিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা – কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নেওয়া হবে। কচ্ছপিয়ার বনের ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, কচ্ছপিয়া বনবিটের মোট বন ভুমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। তৎমধ্যে সংরক্ষিত বনাঞল প্রায় ৩৬ শত হেক্টর আর প্রায় ৯ শত হেক্টর রক্ষিত বা প্রাকৃতিক বনাঞল।সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর বনাঞলের প্রায় ২ হাজার হেক্টর বনাঞল প্রায় জবরদখলে চলে গেছে স্হানীয় বন প্রশাসনের উদাসীনতায়। ওই বিট অফিসার তপনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কচ্ছপিয়ার বনবিটের অবশিষ্ট বনাঞলে বর্তমানে দেদাঁরছে চলছে সরকারী অর্থায়নে বাস্তবায়িত বাগানে ছোট বড় মাঝারি সহ সব ধরনের গাছ কর্তনের মহোৎসব। কর্তনকৃত গাছ গুলো অধিকাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে তামাক চুল্লিতে। অবশিষ্ট কাঠ গিলে খাচ্ছে বাইশারী, নাইক্ষ্যংছড়ি সহ রামুর করাত কল গুলো। গর্জনিয়া কচ্ছপিয়ার সর্বত্র এখন তামাক চুল্লিতে কাঠ পোড়ানোর মহোৎসবে পরিনত হয়েছে। ওই সব এলেকায় প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি তামাকের চুল্লি রয়েছে। আর সব চুল্লিতে হাজার হাজার গন ফুট সামাজিক বনায়নের কাঠ পুড়ানো হচ্ছে। কচ্ছপিয়ার দৌছড়ি লেবুছড়ি সড়কে এবং ফুলতলি মৌলভির কাটা সড়কে দায় সারাভাবে ওই সব কাট পাচার হচ্ছে।

ফুলতলি এলাকার এক জন জানান, কচ্ছপিয়ার সরকারী বন এখন যেন বনদস্যুদের পৈত্তিক সম্পত্তি। স্হানীয় যারা ভিলিজার তারাই এলাকার বনদস্যু বাহিনীর টপলিডার। তারা নিজেকে একটি রাজনৈতিক দলের ক্যাড়ার হিসাবে জাহির করে স্হানীয় জনগনকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বন নিধনে নেমেছে দীর্ঘ ১ যুগ ধরে।সম্প্রতি তার অপকর্ম আরো আশংকা জনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।সে চোরাই পথে কাঠ পাচারের পাশাপাশি সম্প্রতি মৌলবির কাটা বাজারে প্রকাশ্যে কচ্ছপিয়া বনবিটের নাম ভাঙ্গিয়ে লাকডি ও কাঠ ভর্তি গাড়ি অনুযায়ী ৩০০/ ৫০০ টাকা টেক্স আদায় করছে।

অভিযোগের ব্যাপারে কচ্ছপিয়ার বিট অফিসার তপনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা লাকড়ির গাড়ি পাইলে আটক করেন। আবার তাদের কিছু ব্যক্তিগত কাঠ আছে ওই সব কাঠ যদি ওই আটক কৃত গাড়ির মালিক তাদের বলে দেওয়া স্থানে পাচার করে তাহলে আবার তারা ওই কাঠ ছেড়ে দিবেন। এ ব্যাপারে বাকঁখালী বন রেন্জ কর্মকর্তা আতাইলাহী জানান, তিনি এই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।