ইমরান হোসাইন, পেকুয়া থেকে:

টানা বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাসছে চকরিয়া ও পেকুয়ার নিম্নাঞ্চল। গত সোমবার থেকে উজানের পাহাড়ি এলাকায় ঢল নামতে শুরু করলে পৌরসভাসহ দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে অন্তত ৩০ হাজারের বেশী বসতঘরে পানি উঠেছে। গ্রামীন সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার অভ্যন্তরীণ জিদ্দবাজার-মানিকপুর সড়ক, চিরিঙ্গা-বদরখালী সড়ক, কেবি জালাল উদ্দিন সড়ক ও বরইতলি-মগনামা সড়ক সহ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কের উপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে গ্রামীন সড়কে যান চলাচল একেবারে বন্ধ। আঞ্চলিক সড়কে জীবন ঝুঁকি নিয়ে অল্প সংখ্যক গণপরিবহণ চলছে। এসব
এলাকার অধিকাংশ বিদ্যালয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। এদিকে চকরিয়া পৌরসভার একাংশ পাহাড়ি ঢলে ও বৃহৎ অপর অংশ জলাবদ্ধতায় পানিবন্দী রয়েছে হাজারো পরিবার।

সরেজমিন ঘুরে দখো গেছে, পাহাড়ি ঢলের প্রবেশমুখ সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন ও কাকারা ইউনিয়ন ৪-৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। পাহাড়ি এলাকায় বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার আশংকা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া চকরিয়ার লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, ফাঁশিয়াখালী, বদরখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী ও পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা, হরিনাফাড়ি, বিলহাছুরা, শিলখালী ইউনিয়নের হাজীর ঘোনা, মাঝের ঘোনা, জনতা বাজার, উজানটিয়া, মগনামা, রাজাখালী, টৈটং ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

চকরিয়া পৌরসভার বাসিন্দা জিয়া উদ্দিন ফারুক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাবি সত্বেও দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত নালা নির্মাণ না করা ও নালা পরিস্কার না করায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ২নং ওয়ার্ড়ের শমসের পাড়াসহ নিকটস্থ মহল্লাগুলোতে।
এ এলাকার সিংহভাগ ঘরে পানি উঠেছে। এছাড়া বাটাখালী ব্রীজ থেকে থানার মোড় হয়ে  মগবাজার পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, আমি বরইতলী ও কাকারা ইউনিয়নে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। বন্যাকবলিত পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে শুকনো খাবার দিতে সকল চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি। চকরিয়ার বন্যার ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে অবহিত করে প্রয়োজনীয় জরুরি ত্রাণ বরাদ্দ চেয়েছি।

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম বলেন, বন্যাকবলিত কোন মানুষকেই না খেয়ে থাকতে হবে না। সরকারী বরাদ্দ আসতে বিলম্ব হলে আমি নিজেই প্লাবিত এলাকায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছিয়ে দেব।