নিজস্ব প্রতিবেদক:
রামু উপজেলার দক্ষিণমিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুচ ভুট্টো বলেছেন- ইয়াবা ব্যবসার সাথে আমার কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনোভাবেই আমি ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত নই। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আমি হেনস্থা করেছি। এটা সর্বস্তরের মানুষ জানে। মূলত আমার রাজনৈতিক ও নির্বাচনী প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার। প্রতিপক্ষরাই ষড়যন্ত্র করে আমাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে প্রচার করাচ্ছে। রোববার (২৭ মে) কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলসে চেয়ারম্যান ইউনুচ ভুট্টো একথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান ইউনুচ ভুট্টো বলেন, শনিবার (২৬ মে) বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রামু উপজেলার ইয়াবার পৃষ্ঠপোষক বা গডফাদার শীর্ষে মর্মে আমি এবং আমার ভাই নুরুল আজিমের নাম উল্লেখ করায় আমি হতবাক হয়েছি। আমি কখনো ইয়াবা ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমার কোন আত্মীয়-স্বজনও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত নেই। কোন ইয়াবা ব্যবসায়ির সাথে আমার বা আমার পরিবারের কোন সদস্যের ন্যূনতম সম্পর্কও নেই। এমনকি আমার বিরুদ্ধে বা আমার পরিবারের কারো বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার কোন অভিযোগ অতীতেও ছিলো না, এখনো নেই।

তিনি আরো বলেন, কোন সরকারি তালিকাতেও আমার নাম নেই। এরপরও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এ সংবাদে আমাকে এবং আমার ভাইকে জড়িয়ে আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চলছে। মূলত আমি বিগত ইউপি নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শত্রুতাবশত আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। এছাড়া রাজনৈতিক ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী কিছু নেতাকর্মীও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে মেতেছে। আমার ধারনা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারকারীরাই এ সংবাদে আমার নাম প্রকাশে ইন্ধন দিয়েছে।

চেয়ারম্যান ভুট্টো বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই দক্ষিন মিঠাছড়ি ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করার আন্দোলন করে আসছি। আমার নির্বাচনি ইস্তেহারেও দক্ষিন মিঠাছড়ি ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করার ঘোষনা ছিল। যা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকাবাসির সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করছি। তখন থেকে মাদক ব্যবসায়িরা আমার শত্রুতে পরিনত হয়েছিলো। আমার ধারনা কৃচক্রী মাদক ব্যবসায়িরা সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্যদিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।

ইউনুছ ভুট্টো বলেন, আমি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে আমি সংসারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আমি কখনো বিত্তশালী ছিলাম না। এখনও নেই। এমনকি আমার ব্যাংক হিসাবেও কোন অস্বাভাবিক লেনদেন হয়নি। যা তদন্ত করলে জানা যাবে। সম্প্রতি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এলাকার লোকজনকে উদ্দেশ্য করে আমাকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকী দিয়েছেন। এ সংবাদ পড়ে প্রতীয়মান হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরাই আমাকে ইয়াবা ব্যবসায়ি বানাতে উঠেপড়ে লেগেছেন।

তিন আরো বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আদর্শে অনুপ্রানিত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাসী একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। আমি দীর্ঘদিন রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচারে আমি মোটেও ভীত নই।

এছাড়া দক্ষিণমিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ইউনিয়নে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে জিনেরঘোনা ইউনুচ ভুট্টো প্রাথমিক বিদ্যালয়, চেইন্দা লারপাড়া দারুল উলুম হেফজখানা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি।

ইউনুছ ভুট্টো সংবাদপত্র সংস্থা ও সাংবাদিকদের প্রতি নিরীহ ব্যক্তিদের জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান এবং এ ধরনের স্পর্শকাতর সংবাদ লেখনীতে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান। পাশাপাশি উল্লেখিত মিথ্যা সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ এবং আইনশৃংখলা বাহিনীসহ এলাকাবাসিকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির নেতৃবন্দ বলেন, আমাদের জানা মতে ইউনুচ ভুট্টো সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন। এই সংক্রান্ত ১০টির বেশি ঘটনার কথা আমরা জানি। আমাদের প্রগাঢ় বিশ্বাস ইউনুচ ভুট্টো কোনোভাবেই ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত নেই। তার বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার হচ্ছে আমরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো। অপপ্রচারকারীদের আমরা প্রতিরোধ করবো।

সংবাদ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম, রামু চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি চাকমারকুল ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, কাউয়ারকোপ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহামদ, গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নজরুল ইসলাম, জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন প্রিন্স ও দক্ষিণমিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সদস্যাবৃন্দ।