ওমর ফারুক হিরু

কক্সবাজারের সাংবাদিকরা বর্তমান সময়ে অনেক বেশি এগিয়ে এবং গুরুত্বর্পূণ অবস্থানে। কিন্তু কিছু অযোগ্য ব্যক্তির কারনে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথমেই ছোট্ট তিন’ টি ঘটনার বর্ননা দিচ্ছি।

প্রথমঃ আজ থেকে প্রায় ১০ মাস আগে এক সাংবাদিক কক্সবাজার সদর থানায় নিউজের জন্য গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে তার পরিচয় দেন। তখন ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার দরকার নেই। এই যে দেখছেন, চা নিয়ে যাচ্ছে, সে আমার অফিস সহকারী। সেও কিন্তু একটি পত্রিকার গুরুত্বর্পূণ দায়িত্বে আছে। ওসব বাদ দিয়ে কি জানতে চান সেটাই বলেন’। নতুন সাংবাদিকতায় আসা ওই সাংবাদিক’কে সবার সামনে ছোট করে ভাল’ই মজা নিচ্ছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। 


দ্বিতীয়ঃ গত ১০ এপ্রিল লাইট হাউস কটেজ জোন এলাকায় একটি নারী পর্যটক খুন হয়। ওই সংবাদ সংগ্রহ করতে দিয়ে দেখা যায়, কোমরে ক্যামরা ঝুলানো এক যুবক মহাব্যস্থ। সে সাংবাদিকতার জন্য কারো বাধা মানছেনা। মনে হচ্ছিল ওখানে এই মাত্র বোমা পড়েছে অথবা বিল্ডিং ধ্বসে পড়েছে আর সে ওই নিউজ কাভার করছে। লোকজনকেও ধাক্কা দিচ্ছিল। এরমধ্যে দায়িত্বরত সাংবাদিকদেরও দিক নির্দেশনা দিচ্ছেলেন। তার এই অস্থিরতা দেখে পুলিশ আর অন্যান্য সাংবাদিকরা এক সাথে জানতে চাইল ‘ভাই আপনি কোথা থেকে এসেছেন? আপনি কে? আপনি এত অস্থির কেন? তিনি ক্ষেপে গিয়ে বললেন, জানেন আমি কে? আমি অমোক পত্রিকার সাংবাদিক। তাকে এর আগে কেউ এই জগতে না দেখলেও তিনি ঠিকই একটি পত্রিকার পরিচয় পত্র দেখিয়েছেন। 


তৃতীয়ঃ শহরের আলিক জাহাল এলাকায় এক পানের দোকানদারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় স্থানীয় এক যুবকের। এক পর্যায়ে ওই দোকানদার হঠাৎ বলে উঠে জানিস আমি কে? এই কথা বলতে বলতে সে বক্স থেকে একটি পত্রিকার পরিচয় পত্র বের করে। আর বলেন, আমি এই পত্রিকার সাংবাদিক। কার সাথে লাগতে আসছিস, অবস্থা খারাপ করে দেব।
এই ৩ টি ঘটনার মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা, আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকার নব্য অস্থির সাংবাদিক আর পানের দোকানী কেউ আমার চোখে দোষি নয়। দোষি হচ্ছে তারাই যারা কক্সবাজার সদর থানার অশিক্ষিত দালাল আর অফিস সহকারীকে পত্রিকার গুরুত্বপূণ দায়িত্ব দিয়েছে। দোষি হচ্ছে তারাই যাচাই-বাচাই ছাড়া, প্রশিক্ষন ছাড়া, লেখা-পড়া ছাড়া অস্থির এক যুবককে সাংবাদিকতার লাইসেন্স দিয়েছে। দোষী তারা’ই যে সম্পাদক টাকার বিনিময়ে সাংবাদিকতার পরিচয় পত্র বিক্রি করেছে। যেভাবে চলছে সামনে হয়ত মাছ বিক্রেতা আর টমটম চালকের হাতেও সাংবাদিতকার পরিচয় পত্র পৌছে যাবে।
তাই আমাদের দিক নির্দেশকদের বলছি, প্লিস আপনারা কিছু করেন এসব বন্ধ করার জন্য। এসব বন্ধের জন্য নিদৃষ্ট একটি নিয়ম নীতি বাস্তবায়ন করা হোক।


আবার দেখা যায়, কিছু লোক উদ্দেশ্য মূলকভাবে সাংবাদিককে হাড করে কমেন্স করেন। কমেন্স দাদাদের বলছি, ওসব কমেন্স দিয়ে আপনার অপকর্ম ঢাকা পড়বে না। হয়ত কিছু সময়ের জন্য হাসতে পারবেন। কক্সবাজারের সাংবাদিকরা অন্যান্য জেলার ছেলেদের ছেয়ে একটু বেশি এগিয়ে। আর একটু ভিন্ন। তারা ভাল করে জানে অপরাধীরা কারা। কার কি অপকম। তারা সব সময় চেষ্টা করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে মাদক, সন্ত্রাস আর দূনীতি মুক্ত রাখতে।

লেখক: জিটিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি ও স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক কক্সবাজার।