আহারে জীবন!

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ১২:২২ , আপডেট: ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ১০:৪৫

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


বিচ্ছিন্ন পা নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে অসহায় রিকশাচালক আব্দুল মালেক।

শাহেদ মিজান, সিবিএন:
এক মুহূর্তে পরেও কি ঘটবে তার কোনো ইঙ্গিত পৃথিবীর কোনো মানুষের কাছে নেই। তাইতো ‘মৃত্যু নি:শ্বাসের চেয়েও কাছে’। অথচ মানুষ কত স্বপ্ন-আশা নিয়ে এগিয়ে চলে প্রতিটি মুহূর্ত। তখন ঘূর্ণাক্ষরেও তার মনে থাকে না ক্ষনিক পরেই তার জন্য অপেক্ষা করছে এক ভয়ানক ক্ষণ। অসহায় রিক্সা চালক মালেকের চিত্রটারও এর থেকে কোনো ধরণের ভিন্নতা ছিলো না নিশ্চিত! তাইতো সড়কের পাশে রিক্সা দাঁড় করিয়ে বিশ্রামের ফাঁকে পাশের দোকানে চলতে থাকা টিভিতে একটু উঁকি দিয়েছিল। কিন্তু মালেককে মুহূর্তেই ধাক্কা দিলো ধেয়ে আসা একটি বেপরোয় কার। এতে চিরতরে হারালো একটি পা।

রোববার (২২ এপ্রিল) কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনার সাথে ভেঙে গেলো একটি মানুষের অপার স্বপ্ন-আশা, তছনছ হলো একটি একটি পরিবারের বেঁচে থাকার আস্থা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই কারের ধাক্কায় মালেক ছাড়াও আরো দু’জন আহত হয়েছেন। তবে তাদের আঘাত গুরুতর হয়নি। কারের ধাক্কায় মুহূর্তের মধ্যে মারাত্মক জখম হয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছিটকে পড়ে। সেই রক্তে ওই স্থানে রঞ্জিত হয় পাশের বিদ্যুতের খুঁটিসহ আশপাশ।

জানা গেছে,  কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যরর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বেপরোয়া প্রাইভেট কারের ধাক্কায় পা হারানো মহেশখালীর আধারঘোনার রিকশাচালক মালেক। ডান পা কেটে ফেলাও হলেও বাম পা’টাও কেটে ফেলতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে উন্নত চিকিৎসা ফেলে তা পা না কেটে পারার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও তার অন্ডকোষ থেকেও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সব মিলিয়ে মালেকের অবস্থা মারাত্মক।

মালেকের স্বজনেরা জানান, অন্য কোথাও নিয়ে চিকিৎসা করা দূরের কথা, তাদের কাছে গাড়ি ভাড়ার পয়সাটাও নেই। অন্যদিকে এমনকি মামলা না করতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করছে তাদের অভিযোগ। অত্যন্ত দুঃখজনক হচ্ছে ঘাতক কারের মালিকের  পক্ষ থেকে মালেককে সাহায্য করারতো দুরের কথা এখন পর্যন্ত একবারও দেখতে যায়নি কেউ।

মালেক কক্সবাজার শহরের রিক্সা চালিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দিনে। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে। তবে অন্তত তার জানটা বাঁচানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সাহযোগিতা কামনা করছেন তার পরিবার। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চান তাঁরা।

কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন এজাহার দেয়নি, তবে দিলে মামলা নেওয়া হবে।