সাইফুল ইসলাম :

অল্প বৃষ্টিতেই রোহিঙ্গারা আতঙ্কের মধ্য পড়েছে। পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসতি গড়া ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গার ঘুম হারাম হয়ে উঠেছে পাহাড় ধসের আশংকায়। পাশাপাশি মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছিল বিভিন্ন সড়ক-উপসড়ক। কিন্তু গতকাল সকালের দিকে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। সড়কের অবস্থা হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক। বৃষ্টির কারণে যাতায়াতের পথগুলো অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোহিঙ্গারা। বর্ষা যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই মৃত্যুর ভয় তাড়া করছে রোহিঙ্গাদের। তবে সাহায্যকারী সংস্থার দাবী রোহিঙ্গাদের নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে তারা দিন রাত কাজ করছেন।

জানাযায়, ছোট ছোট বাঁশের খুঁটির উপর থিপলের ছাউনি দিয়ে পাহাড়ের টিলায় বানানো ঘর গুলো অতি-বর্ষণে ধসে পড়ার শংকা রয়েছে তাদের মনে। পাশাপাশি সামান্য বাতাসে ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় এখন প্রতিটি রোহিঙ্গাদের। উখিয়া-টেকনাফের ১২ টি রোহিঙ্গা শিবিরের মধ্যে প্রায় ১০ শিবিরের ১১ লাখের বেশী রোহিঙ্গা পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। এনিয়ে অনেক এনজিও সংস্থাও হতাশা প্রকাশ করেছে। দ্রুত রোহিঙ্গাদের যদি পাহাড় থেকে নামিয়ে সমতলে আনা না হয় তাহলে বড় ধরণের বিপর্যয়ের আশংকা করছেন তারা।

কুতুপালংয়ের মধুপালং এলাকায় পাহাড়ের উপরে বসবাসরত রোহিঙ্গা আব্দুল করিম জানান, আমরা খুবই ঝুঁকিতে রয়েছি। বৃষ্টি হলেই ও আমরা পাহাড় ধসের শিকার হবে। কিন্তু কি করবো কোথাও যাওয়ার কোন জায়গা নেই। সামনের দিকে প্রাকৃতিক দূযোর্গ আসবে ভয়ে চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে আমাদের মনে।

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্বামী হারা বিধবা রোকসান বেগম নামে এক মহিলাও একই কথা বলেন। তিনি আরও জানান, আমি পাহাড়ের টিলায় ঝুঁপড়িতে তিন সন্তান নিয়ে আছি। কিন্তু বাংলাদেশে এসে এটাই পেয়েছি তাতে হাজার শোকুর। সামনে আসছে বর্ষা এনিয়ে পাহাড় ধস নিয়ে চিন্তার মধ্যে রয়েছি। গতকাল অল্প বৃষ্টিতেই আমরা চিন্তার মধ্যে আছি। স্বামী না থাকায় তিন সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টের জীবন যাপন করছি।

এদিকে রোহিঙ্গা শিল্পী সাইদুল ইসলাম আসন্ন বর্ষা নিয়ে তার গাওয়া গানে প্রশ্ন রেখেছেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে রোহিঙ্গারা কোথায় যাবেন, কি করবেন। তারা বাঁচতে চান, এই জন্য রোহিঙ্গাদের সাহার্য্যে বিশ^বাসীকে আরো কাছে আসার আহবান সাইদুলের কন্ঠে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আফাদে’র প্রধান মাহমিদ আলী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, ইতোমধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেড় লাখের মতো মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক দূর্যোগে রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষায় আমরা সর্তক অবস্থানে রয়েছি।

এদিকে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানান, অতি ঝুকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সরকারকে আগে থেকেই জানানো হয়েছে। তাদের সমতলে কয়েক একর জমি বরাদ্ধ চাওয়া হচ্ছে। জমি বুঝে পেলেই ঝ্ুঁকিপূর্ণদের সেখানে স্থানান্তর করা হবে।