সাইফুল ইসলাম

পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পরিবর্তনের বাতাস বইছে। আসতে শুর করেছে দেশি ও বিদেশী পর্যটক। দেশী বিদেশী অতিথিদের পদভারে ইতোমধ্যে আবারো মূখরিত হয়ে উঠবে সমুদ্র নগরী কক্সবাজার। মৌসুমের শেষের দিকেও সমুদ্র সৈকতে এখনও দেখা মেলে অসংখ্য পর্যটকের। বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে শহরের আবাসিক হোটেলগুলো অনেকটাই আগাম বুকিং হতে চলছে। পিকনিক স্পটসমূহতে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। এর সার্বিক দিক বিবেচনা করে প্রশাসনের নিরাপত্তা জোরদার আরো বৃদ্ধির দাবি পর্যটক ও স্থানীয়দের। পহেলা নববর্ষে শহরের ব্যস্ত মানুষগু‌লোর একটু অবসর যখন মিল‌ছে তখনই সমু‌দ্রের এমন স্নিগ্ধ আচরণ দেশী-বিদেশী পর্যটক‌দের আহবান কর‌ছে কক্সবাজার। ই‌তোম‌ধ্যে যারা সমু‌দ্রের লোনা জলের স্পর্শ পে‌য়ে‌ছেন তারা মে‌তে‌ছেন আনন্দ উল্লাসে। সেল‌ফি আর ল্যান্সের নানা ফ্রে‌মে নি‌জেদের ব‌ন্দি কর‌ছেন বিশাল সৈকত আর সমুদ্রের সা‌থে।

গতকাল পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, সমুদ্র সৈকতের প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মৌসুমের শেষের দিকেও পর্যটক রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে আনন্দ উল্লাসে দিন কাটাচ্ছে কেউ হাটঁছেন, কেউ চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ গোসলে মত্ত, আবার কেউ বিচ বাইক ও ওয়াটার বাইকে চড়ে উপভোগ করছেন।

পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও বীচে ট্যুরিস্ট পুলিশ বেশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান প্রশাসন।

হোটেল ব্যবসায়িরা বলছেন, ৪শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজের সবগুলো রুমের অগ্রিম বুকিং হয়ে যাচ্ছে। এবার দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বিপুল পরিমান বিদেশী পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে। তাই বেড়াতে এসে পর্যটকরা যেন কোন ধরণের হয়রানীর শিকার না হন সে বিষয়ে প্রশাসনকে আরো আন্তরিক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা।

পহেলা বৈশাখের শুভ দিনকে বরণ করতে সমুদ্রের বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা, বালুকা বেলায় ছোটাছুটি আর লোনাজলে সমুদ্র ¯œাানর আকর্ষণে পর্যটকরা ইতোমধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ছুটে আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় কক্সবাজরে পর্যটক আসবে বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে কমপক্ষে ৪শতাধিক হোটেল-মোটেল এবং গেষ্ট হাউজ রয়েছে এবং এখানকার পর্যটন শিল্পের সাথে অন্তত সাড়ে তিন লাখ লোক সরাসরি জড়িত রয়েছে।

ঢাকা ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক জসিম জানান, হোটেল এর রুম পেতে সমস্যা হবে বলেই কয়েকদিন আগে থেকে চলে এসেছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী অনেকেই ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসবে। এখন পরিবেশ ভাল হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। হোটেলের কক্ষ ভাড়া নিতে কোন সমস্যা হয়নি।

সৈকতে বেড়াতে আসেন ঢাকার পর্যটক দম্পতি বাবুল ও রানু। তারা বলেন, সৈকতের বালুচরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার আনন্দ তো আছেই। সেই সঙ্গে এখানে দেখা মেলে পাহাড়-সমুদ্রের মেলবন্ধনের অর্পূব দৃশ্য।

এছাড়াও প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামুর বৌদ্ধবিহার, হিমছড়ির ঝরনা, ইনানীর পাথুরে বীচসহ এখানে দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। এখন পরিস্থিতিও ভালো তাই ছটে আসা।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি শফিকুর রহমান কোম্পানি জানান, কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে ৫শতাধিক হোটেল-মোটেল, কটেজ ও গেস্ট হাউস রয়েছে। ১লা বৈশাখকে টার্গেট করে আসতে আসতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। পহেলা নববর্ষ উপলক্ষে ব্যাপক পর্যটক আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ।