ধর্ম ডেস্ক:
মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ও প্রধান কাজ হলো ইসলামের আকিদা বিশ্বাসের ওপর অটল এবং অবিচল থাকা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিলকৃত কুরআন এবং তাঁর পবিত্র জবানের বাণী হাদিসের নির্দেশের প্রতি যথাযথ যত্নবান হওয়া।

দ্বিধাহীন চিত্তে কুরআন এবং সুন্নাহর অনুসরণ ও অনুকরণ করা। আল্লাহর বিধান এবং প্রিয়নবির সুমহান আদর্শকে গ্রহণ করার পর পুনরায় তা থেকে বেরিয়ে যাওয়া কোনো ঈমানদারের কাজ নয়। বরং এটা অবিশ্বাসী ও কপট লোকদের চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

আল্লাহ তাআলা এ প্রকৃতির লোকদের উদ্দেশ্য করে কুরআনে পাকে ঘোষণা করেন-

‘মানুষের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে যে, যারা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে আল্লাহর ইবাদত করে। যদি সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয় তবে (তার মন হৃদয়) প্রশান্তি লাভ করে। আর যদি কোনো (কঠিন) পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। ওই ব্যক্তি দুনিয়া ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। আর এটাই প্রকাশ্য ক্ষতি।’ (সুরা হজ : আয়াত ১১)

ইসলামের সঠিক পথ ও মতের ওপর অটল ও অবিচল থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুসলিম উম্মাহর জন্য তা গ্রহণ করা আবশ্যক কর্তব্য।

বর্তমান সময়ে দ্বীন ও ইসলামের ওপর অটল ও অবিচল থাকা অনেক কঠিন। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-

‘মানুষের ওপর এমন এক সময় আসবে, যে সময় দ্বীনের ওপর অটল ব্যক্তিকে সেই ব্যক্তির মতো ধৈর্যশীল হতে হবে, যার হাতে থাকবে জলন্ত অঙ্গার।’ (তিরমিজি)

অর্থাৎ একজন মানুষের হাতে জলন্ত কয়লা ধরে রাখা যেমন কঠিন হবে; ঠিক দ্বীন-ইসলামের ওপর অটল ও অবিচল থাকাও সে রকম কঠিন হবে।

মুসলিম উম্মাহর প্রতি মহান আল্লাহ তাআলার একান্ত অনুগ্রহ যে, তিনি তার প্রিয়সৃষ্টি মানুষকে তার পথে ও মতে অটল ও অবিচল রাখতে নাজিল করেছেন মহাগ্রন্থ আল-কুরআন।

যে ব্যক্তি কুরআনকে শক্ত করে ধারণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজত করবেন। যে ব্যক্তি কুরআনের অনুসরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে মুক্তি দান করবেন এবং যে ব্যক্তি কুরআনের প্রতি আহ্বান জানাবেন, আল্লাহ তাআলা তাকে সঠিক ও সরল পথ প্রদর্শন করাবেন।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারিম পর্যায়ক্রমে অল্প অল্প করে নাজিল করেছেন। যাতে এ কুরআনের বিধান অন্তঃকরণে মজবুতভাবে ধারণ করা সম্ভব হয়।

অবিশ্বাসী কাফেররা পবিত্র কুরআন এক সঙ্গে নাজিল করার আবদার তুলেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা সে আবদারের প্রতিবাদে এভাবে কুরআনে ঘোষণা দেন-

‘কাফেররা বলে, তাঁর প্রতি সমস্ত কুরআন এক সঙ্গে অবতীর্ণ হলো না কেন? আমি এমনিভাবে কুরআন অবর্তীণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি, যাতে আপনার অন্তঃকরণে মজবুতভাবে ধারণ হয়। তারা আপনার কাছে কোনো সমস্যা উপস্থিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক উত্তর ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ৩২-৩৩)

দ্বীনের ওপর অটল ও অবিচল থাকতে এ কথা মনে রাখা জরুরি যে-

>> কুরআনের জ্ঞানই মানুষের ঈমানকে মজবুত করে এবং স্রষ্ঠার সঙ্গে সৃষ্টির সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়।

>> ইসলাম বিদ্বেষী, কাফের ও মুনাফিকদের উত্থাপিত সব অবান্তর প্রশ্নের জবাব রয়েছে এ কুরআনে।

>> পবিত্র কুরআনের জ্ঞানই মুসলিম উম্মাহকে ন্যায়-নিষ্ঠাবান হিসেবে তৈরি করে।

>> সঠিক পথে ও মতে চলার উপযোগী করে। বিপথে চলাফেরা থেকে হেফাজত করে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের ওপর অটল ও অবিচল থাকতে কুরআনের জ্ঞান অর্জন করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।