মো: ফারুক, পেকুয়া:

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় অপরিশোধিত লবণের ব্যাপক উৎপাদন হচ্ছে। ইতোমধ্যে লবণ চাষ ৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে। প্রথম ১মাস লবণের দাম কিছুটা সন্তোশ জনক পেলেও বিগত ৩ মাস লবণের দাম অনেকাংশে কমে যাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন চাষিরা। বর্তমান স্থীতি লবণের দাম থেকে আরো কমে গেলে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মোখিন হবে বলে প্রান্তিক চাষীরা অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, বিগত বছর লবণ চাষীরা সাড়ে ৫শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত ছিল। লাভবান হয়েছিল জমির মালিক, প্রান্তিক চাষী, খুচরা ও পাইকারী লবণ ব্যবসায়ীরা। বতর্মান সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ছিল দাম সন্তোশজনক অবস্থায় রাখার জন্য। সরকারের কঠোর নজরদারীর জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকেও লবণ আমদানী করতে পারেনি। যার কারণে চাষীরা সুঃখে শান্তিতে ছিল।

এদিকে বর্তমান বছরের লবণ মৌসুম শুরুতেই লবণের দাম ৩৫০ টাকা ছিল। যা ১মাস স্থীতি ছিল। বর্তমানে লবণের দাম মণ প্রতি ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্ছ ২৭০ টাকা। প্রান্তিক চাষীরা প্রতিকানি মাঠ বর্গা নিয়েছেন সর্বনি¤œ ৩০ হাজার টাকা সর্বোচ্ছ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। রয়েছে শ্রমিক খরচ, পলিথিন ক্রয়সহ আনুসাঙ্গিক খরচ। প্রতিকানিতে লবণ উত্তোলণ হয় ৬মাসে ৩শ ২০মণ থেকে শুরু করে ২শ মণ পর্যন্ত। যার কারণে বর্তমান লবণের দাম আর খরচ প্রায় সমান পর্যায়ে। দাম আরো কিছু কমলে ক্ষতির সম্মোখিন হবে চাষীরা। বর্তমান দাম স্থীতিবস্থায় থাকলেও আারো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর প্রতি মণ লবণ বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৫৩০ টাকায়। এ মৌসুমে শুরুর দিকে মণপ্রতি লবণের দাম ছিল ৩৫০ টাকা, এখন তা ২৫০ টাকায় নেমেছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বিদেশ থেকে আমদানির করা ও আমদানীর গুজব ছড়িয়ে চাষি পর্যায়ে লবণের দাম কমিয়ে দিয়েছে একটি মহল।

লবণ ব্যবসায়ী ও চাষী আনছার উদ্দিন বলেন, বিগত বছরের তুলনায় বর্তমান বছরে লবণের দাম অনেক কম। মৌসুমের প্রথম পর্যায়ে ৩৫০ টাকা আর বর্তমান ৪মাস শেষ হতে চললেও ২৫০ টাকা লবণ বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে চাষীরা ক্ষতির সম্মোখিন হচ্ছে। দ্রুত লবণ আমদানী বন্ধ না হলে চাষীদের বড় ধরণের ক্ষতি হবে।

লবণ ব্যবসায়ী আনসারুল ইসলাম টিপু বলেন, বর্তমান দাম ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমান দাম চাষী ও ব্যবসায়ীদের জন্য মোটামুটি পর্যায়ে রয়েছে। আরো কমলে চাষীরা ক্ষতির সম্মোখিন হবে।

ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু বলেন, পেকুয়ার লবণ চাষীরা এমনিতেই বর্গা নিয়ে লবণ চাষ করে। তার মাঝে দাম কমে য্ওায়ায় চাষীরা হতাশ হচ্ছেন। বর্তমান স্থীতি অবস্থা থেকে দাম আরো কমে গেলে চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মোখিন হবে। আমদানী বন্ধ করে দিলে স্থানীয় চাষীরা লাভবান হবে।

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, সদর, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে উৎপাদিত লবণই পুরো দেশের চাহিদা মেটায়। এ আট উপজেলায় কয়েক বছর পূর্বেও শুধুমাত্র প্রাকৃতিক (সনাতন) উপায়ে লবণ উৎপাদন হতো। বর্তমানে চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, বাঁশখালীর বিভিন্ন স্থানে কৃত্রিম তাপ ধারণ করে পলিথিন পদ্ধতিতেও লবণ উৎপাদন হচ্ছে। এতে কম জমিতে উৎপাদন হচ্ছে অধিক পরিমাণ লবণ। যা সারাদেশের লবণের চাহিদা মেটানো যায়।