হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :

৩০ মার্চ অনুষ্টিতব্য টেকনাফের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্টান হ্নীলা গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশনের ‘সফলতার ২০ বছর’ পূর্তি উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৩ মার্চ বিকাল ৪টায় উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ফাউন্ডেশনের সভাপতি সফিক আহমদ বিকম’র সভাপতিত্বে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশন পরিচালনা কমিটির সদস্য কায়সার উদ্দিন আহমদের পরিচালনায় অনুষ্টিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন হ্নীলা গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জামাল আহমদ। এসময় ফাউন্ডেশন পরিচালনা কমিটির সদস্য মৌলানা ফরিদ আহমদ, আবুল কালাম সওদাগর, মাষ্টার কামাল আহমদ, ছালেহ আহমদ মেম্বার, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মৌলানা এসএম সাইফুল্লাহ, ক্বারী নুরুল ইসলাম, শাহরিয়ার আদনান শান্তনু, শাহ নেওয়াজ, মৌলানা শাকের আহমদ, ফাউন্ডেশন মেডিকেল ডে-কেয়ারের চিকিৎসক জালাল আহমেদ, উত্তর ফুলের ডেইল জামে মসজিদের ঈমাম মৌলানা জাকের হোছাইন প্রমুখ। এসময় টেকনাফে কর্মরত ইলেকট্রনিক্স, জাতীয় ও স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়া এবং অনলাইন সংবাদপত্রের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধান অতিথি ও সাদা মনের মানুষ হিসাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত ডাঃ জামাল আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মা-বাবার স্বপ্ন নিয়ে মানব সেবার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালের ৫ মার্চ হতে আমার পথচলা। হ্নীলা গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে হাশেমিয়া দাতব্য চিকিৎসালয়ে রোগীদের বার্ষিক, মাসিক. সাপ্তাহিক ও দৈনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার করে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। ১৯৯৮ সাল হতে অদ্যাবধি দৈনিক চিকিৎসা সেবা, সাপ্তাহিক চিকিৎসা সেবা, মাসিক চিকিৎসা সেবা, খৎনা, ফ্রি ঔষুধ বিতরণ, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, কর্ণছেদন, শিক্ষার্থীদেরকে কৃমি ও ভিটামিন সেবন, ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং, বার্ষিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসহ ৬৬ হাজার ৫৩৯ জনকে সেবা প্রদান, শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে উপজেলা ভিত্তিক বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুল ৮৪ জন এবং সাধারণ গ্রেড ৪৮০ জন বৃত্তি লাভ করে। এছাড়া ২৫৯ জন গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হয়। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোর্স সম্পন্ন করে ৫০১ জন এবং বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক সার্টিফিকেট কোর্স হতে ২৯ জন সনদ অর্জন করেছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি মেধা চর্চা এবং বিকাশে “গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশ গণ-পাঠাগার” চালু করে। গত ১৬ বছরে ৩৯ হাজার ৬৯৫ জন পাঠকের মধ্যে শ্রেষ্ট পাঠকদের পুরস্কৃত করা হয়। ধর্মীয় প্রকল্পে উত্তর ফুলের ডেইল জামে মসজিদ এবং তৎসংলগ্ন ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, পানখালী ভিলেজার পাড়া মসজিদ, ফোরকানিয়া মাদ্রাসার দরগাহ সিএন্ডবি মসজিদ ও মাদরাসায় প্রতি বছর কয়েক শত জন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ৪ জন শিক্ষক দ্বারা সহীহ কুরআন ও মাসায়েল শিক্ষা দেয়া হয়। ফাউন্ডেশন স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি দুঃস্থদের দিকেও সাধ্যমত সেবার হাত বাড়িয়েছে। ফাউন্ডেশন গরীব-দুঃখী মানুষকে নগদ টাকা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন প্রকারের সহযোগিতা দিয়ে আসছে। গত বছর ফাউন্ডেশন রোহিঙ্গাদেরকে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। এই ফাউন্ডেশন জন্ম লগ্ন থেকে সমাজ সেবা, রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বিশিষ্ট ৪৩ জন ব্যক্তিকে জীবিত ও মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে’।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা পেলে মসজিদ কেন্দ্রিক তৃণমূল তথা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে আর্দশ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র শুরু করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আগামীতে তিনি মানব সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সাফল্যের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনসাধারণের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেন।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ মার্চ আড়ম্বরপুর্ণভাবে অনুষ্টিত হবে গুলফরাজ-হাশেম ফাউন্ডেশনের ‘সফলতার ২০ বছর’ পূর্তি অনুষ্টান। এ অনুষ্টানের সফল বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই যাবতীয় প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে।