ডেস্ক নিউজ:
মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (শনাক্তকরণ রাসায়নিক পদার্থ) ব্যবহার, অননুমোদিত এজেন্ট থেকে ওষুধ ক্রয় এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই সঙ্গে তাদের ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। এই ১৫ দিনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও উপকরণ পরিবর্তন ও সরিয়ে ফেলা না হলে হাসপাতালের আইএসও সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।

তিনি বলেন, হাসপাতালের ল্যাবে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (শনাক্তকরণ রাসায়নিক পদার্থ) ব্যবহার হতো। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অননুমোদিত এজেন্ট থেকে ওষুধ ক্রয় এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সার্জারিতে ব্যবহৃত সুচারের মেয়াদও শেষ পর্যায়ে। এসব কারণে তাদের ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও উপকরণ পরিবর্তন ও সরিয়ে ফেলা না হলে তাদের ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (আইএসও) কর্তৃক প্রদত্ত সনদও বাতিলের সুপারিশ করা হবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, ল্যাব ও ওষুধপত্রের মেয়াদ যাচাইয়ে অভিযান শুরু করেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বিকেলে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের অভিযানের বিষয়ে ব্রিফ করেন।

অভিযানের সময় ইউনাইটেড হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, হিস্টোপ্যাথলজি ল্যাব, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাব, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি ল্যাব, হেমাটোলজি ল্যাবসহ সব ল্যাবে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ ও উপকরণের পরীক্ষা করা হয়।

media

পরীক্ষায় দেখা যায়, ল্যাব থেকে জব্দ করা কেমিক্যালের মধ্যে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের (প্যাথলজিক্যাল টেস্টের কাজে লাগে) ব্যবহৃত জার ২০১৫ সালের ৩১ জুলাইয়ে মেয়াদ শেষ হয়েছে।

পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইডের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট। নিয়মানুযায়ী জারে এটি খোলার দিন-তারিখ উল্লেখ থাকার কথা। কিন্তু সেটাও মানা হয়নি।

এক কেজির সোডিয়াম ক্লোরাইডের একটি পুরনো জার উদ্ধার করা হলেও এটি খোলার কিংবা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লেখা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে এগুলো দিয়েই দীর্ঘদিন টেস্টের কাজ চলাতো ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ওষুধ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার প্যাথলজি ল্যাব ও হেমাটোলজি ল্যাবের অবস্থান। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার কাছ থেকে ওষুধ আমদানি ও ক্রয় করে, রিজেন্টের মেয়াদ আছে কি-না ইত্যাদি বিষয়ও যাচাই-বাছাই করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ল্যাবে রোগ নির্ণয়ের মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (রোগ নির্ণয়ের জন্য রাসায়নিক উপাদান) ব্যবহার এবং ফার্মেসিতে প্রশাসনের অনুমোদনহীন ওষুধ রাখায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতাল ও ফার্মেসিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।