ডেস্ক নিউজ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার চট্টগ্রামের পটিয়া যাচ্ছেন। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিকেলে বক্তব্য দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভাকে কেন্দ্র করে ২ হাজার ৪ শ’ বর্গফুটের বিশাল এক মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। নৌকার আকৃতির ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয় দুই সপ্তাহ আগে থেকে। মঞ্চ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। এই নৌকাতে দাঁড়িয়েই বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকালে নৌবাহিনীর দুটি অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠান শেষে নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর তিনি পটিয়ায় যাবেন। সেখানে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তার ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। ভাষণের আগে জনসভাস্থল থেকে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দলীয় প্রধানের জনসভাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

সোমবার সন্ধ্যায় মূল মঞ্চের কাজ শেষ হয় বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন পটিয়া আসনের এমপি শামশুল হক চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশে ঢুকতে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ টি প্রবেশপথ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটকে মূল প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। মাঠের দক্ষিণ পাশে রাখা হয়েছে ২ টি প্রবেশপথ। এর একটিতে সমাবেশে নগর ও উত্তর এবং অন্যটিতে দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীরা প্রবেশ করবেন। এছাড়া পটিয়া কলেজ গেট দিয়ে মহিলাদের জন্য একটি আলাদা প্রবেশপথ রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, এ মঞ্চে সর্বোচ্চ দুইশ জন নেতা অবস্থান নিতে পারবেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার কার্যনির্বাহী কমিটির ৭০ জন নেতা ঠাঁই নিতে পারবেন মঞ্চে। মহানগর ও উত্তর জেলার জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ২০ জন করে ৪০ জন নেতার সংখ্যা। পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম শামসুজ্জামান চৌধুরী জানান, জনসভার জন্য বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা যাতে নির্বিঘ্নে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখতে ও শুনতে পান সেজন্য ঢাকা থেকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ‘কলরেডি’র ১৫০ টি মাইক ও ২০ পেয়ার সাউন্ড বক্স আনা হয়েছে। জনসভা মঞ্চের পাশে ২ টি ও বিভিন্ন স্থানে আরও ৫ টি বড় এলইডি মনিটর বসানো হবে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বলেন, তিন হাজার ফোর্স আমরা মোতায়েন করছি। এর মধ্যে ১৩০০ ফোর্স চট্টগ্রামের বাইরের এবং ১৭০০ ফোর্স জেলা থেকে যাচ্ছে। হেলিপ্যাড থেকে জনসভাস্থলের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এই পুরো পথটাতে হিউম্যান চেইনের মতো পুলিশ বেষ্টনী থাকবে। জনসভাস্থল পর্যন্ত পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর বিশেষ ‘হিউম্যান ট্রেন’ তৈরি করা হবে।

তিনি আরও বলেন,জনসভাস্থল ও আশেপাশে এসএসএফ, পিজিডি, পোশাকধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকের চার স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। সঙ্গে থাকবে মোবাইল পার্টি। তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০টি উচ্চমাত্রার ‘ক্লোজ সার্কিট’ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে চন্দনাইশ থেকে ক্রসিং পর্যন্ত ৫শ’ ট্রাফিক পুলিশ রাখা হয়েছে। জনসভার আশপাশে হাইরাইজ বিল্ডিংগুলোর উপর ও নিচে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ সদস্যরা।

পটিয়ার জনসভায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে গৃহীত ৪১ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসন, সড়ক ও যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক চর্চার বিকাশ ঘটাতে গৃহীত প্রকল্প। এছাড়া চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স স্থাপনেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।