দায়িত্ব আবহেলায় বাদ যাচ্ছে ১০ প্যানেল আইনজীবী

ইমাম খাইর, সিবিএন:
জনস্বার্থের কাজকে যারা গুরুত্ব দেয়না, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেনা তাদের ছাড় দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম।

সোমবার (১৯ মার্চ) বিকালে লিগ্যাল এইডের মাসিক সমন্বয় সভায় জেলা ও দায়রা জজ একথা বলেন।

তিনি বলেন, অস্বচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের জন্য সরকার বিনা খরচে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে। কক্সবাজারে ৪৬ জন প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। দুঃখের বিষয়, ১০ জন প্যানেল আইনজীবী ৮ বছর ধরে একটি মামলাও শেষ করতে পারেননি। তারা সংশ্লিষ্ট কাজের খোঁজও নেননা। এসব আইনজীবীকে আর ছাড় দেয়া হবেনা। প্যানেল আইনজীবীর তালিকা থেকে তাদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগ করা হবে। সেক্ষেত্রে তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হবে।

জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অভিনন্দন জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেন।

কর্মে অনুপস্থিত ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগে যেসব প্যানেল আইনজীবীর নাম কর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে সভায় তাদের তালিকা তুলে ধরেন মীর শফিকুল আলম। ওই তালিকায় রয়েছেন- মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, মোঃ আহসান উল্লাহ, মোক্তার আহমদ (৩), মোঃ ফিরোজ আলম, একেএম এরশাদ উল্লাহ, মিসেস ফাহিমা আক্তার, এম হারুন আর-রশিদ, মোঃ ফারুক ইকবাল, সেলিম উদ্দিন (রাজু) এবং মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।

তবে, সভায় উপস্থিত এক সংবাদকর্মীর প্রস্তাবনার ভিত্তিতে নাম কর্তনের সুপারিশকৃত ১০ আইনজীবী তাদের স্বপক্ষে লিখিত বক্তব্য জমা দেয়ার সুযোগ পাবেন। তাতে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে তাদের বহাল রাখা হতে পারে। লিগ্যাল এইডের সেবা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে প্যানেল আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম।

প্যানেল আইনজীবী খাইরুল আমিনের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে জেলা ও দায়রা জজ বলেন, তিনি (খাইরুল আমিন) অফিসিয়্যাল নিয়ম বহির্ভুত কিছু কাজ করেছেন। অতিরিক্ত বিল জমা দিয়েছেন। তাকেও রাখা, না রাখার ব্যাপারে ভাবতে হবে। এ বিষয়ে জেলা বারের সভাপতি ও সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। শুরুতে ফিতা কেটে লিগ্যাল এইডের মাসিক সমন্বয় সভার মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর উদ্বোধন করেন জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম।

সভায় জানানো হয়- এ বছরের গত ১৮ ফেব্রুয়ারী থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত এক মাসে মোট ১৯২টি আবেদন জমা পড়ে। সেখানে জেলা কারাগার থেকে আসে ৪৭টি এবং সরাসরি জমা হয় ১৪৫টি। বিরোধ নিস্পত্তির জন্য নোটিশ করা হয় ৮০টি। সহযোগিতার জন্য থানায় প্রেরণ করা হয় ৪টি। ১০৮টির জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।

এই সময়ের মধ্যে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি হয় ৮৩টি। সেখানে সফল নিস্পত্তি হয় ৪০টি। নিষ্ফল হয় ৪৩টি। নিম্ন আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা পরিচালনা করে নিষ্পত্তি করা হয় ১৬টি।

জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ বেগম তাওহীদা আক্তারের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ ওসমান গণি, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ তৌফিক আজিজ, যুগ্ম-জেলা জজ আদালত-১ম এর বিচারক সালমা খাতুন, সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আলাউল আকবর, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইছহাক (জিপি), বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রশীদ আমিন (সোহেল), ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, নারী কোর্টের পিপি মমতাজ আহমদ। এসময় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম মঈন উদ্দিন, জেলার শাহাদাত হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।