হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:

১২৮ বছরের পুরানো প্রাচীণতম ঐতিহ্যবাহী টেকনাফ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৭ সালের সমাপণী পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করে উপজেলায় সেরা হয়েছে বলে জানা গেছে। সমাপণী পরিক্ষায় স্কুলটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৩ জন ‘এ+’ ৫০ জন ‘এ’ সহ শতভাগ পাশ করেছে। ম্যানেজিং কমিটি পরিবর্তন করার পর মাত্র কয়েক মাসের মাথায় অনুষ্টিত পরীক্ষার এ ফলাফলে সর্বমহলে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে ।

১৩ জন ‘এ+’ প্রাপ্তরা হচ্ছে মোঃ আল মাহমুদ মাহিন, আল আমিন, মোঃ ইসমাইল, সজীব কুমার শীল, সৌরভ শীল, নুর শাহেদ, সাইফুল ইসলাম, নাসরিন সুলতানা ডলি, নুসরাত জাহান ঝুমা, তারিন রেহনুমা প্রমি, ঐশ্বর্য পাল ঐশী, ফাতেমা খাতুন, সাজিয়া আক্তার।

জানা যায়, ১৮৯০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত। ‘মডেল’ স্কুলে উন্নীত হওয়ার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে আশাতীত সফলতার স্বাক্ষর রেখে আসছে। বিশেষতঃ ২০১৭ সালের শেষার্ধে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) পরিবর্তন করার পরপরই স্কুলটির সর্বক্ষেত্রেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি করে ৩ বছর মেয়াদী নতুন কমিটি দায়িত্বভার গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ১০ জুলাই। মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ৯ জুলাই। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন সহ-সভাপতি মোঃ আলম বাহাদুর, সদস্য যথাক্রমে এম আনোয়ার কামাল, রেজাউল করিম মানিক, জেসমিন কালাম সুমি, আজিজা বেগম, সমিরা আক্তার, মোঃ হারুন, ঝর্ণা দাশ, বাবু অংথোইউ, সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক এইচএম কামাল।

২০১৭ সালের ১০ জুলাই নতুন ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) দায়িত্বভার গ্রহণ করার মাত্র ৩ মাস পরে অনুষ্ঠিত হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী পরীক্ষা। কমিটির সার্বিক নজরদারী ও তদারকিতে শিক্ষক এবং অভিভাবকগণের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিক্ষার ফলাফলে অতীতের সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে এ স্কুলে এইচএম কামাল বিএ প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক যথাক্রমে স্বপ্না দাশ এসএসসি, হাবিব উল্লাহ বিএ, নীলা সরকার বিএ, আলী আকবর সাজ্জাদ বিএ, রিদওয়ানা বেগম এইচএসসি, ছালেহা আক্তার বিএসসি, ঝর্ণা দাশ এইচএসসি, আরিফ হাসান বিএ, তারেক আলী বিএ, বাপ্পী পাল বিএ, সাইফুল ইসলাম বিএ কর্মরত রয়েছেন। মোট ১৩টি মঞ্জুরী পদের মধ্যে ১টি শুন্য এবং ১ জন শিক্ষক ডেপুটেশনে আছেন। চলতি ২০১৮ শিক্ষাবছরে ৫ম শ্রেনীতে ৯০ জন ছাত্র ৮০ জন ছাত্রী মোট ১৭০ জন, ৪র্থ শ্রেনীতে ৮৩ জন ছাত্র ৫৭ জন ছাত্রী মোট ১৪০ জন, ৩য় শ্রেনীতে ৬৩ জন ছাত্র ৫৬ জন ছাত্রী মোট ১১৯ জন, ২য় শ্রেনীতে ৩০ জন ছাত্র ৪৪ জন ছাত্রী মোট ৭৪ জন, ১ম শ্রেনীতে ৩৫ জন ছাত্র ৩০ জন ছাত্রী মোট ৬৫ জন, শিশু শ্রেনীতে ১৪ জন ছাত্র ২০ জন ছাত্রী মোট ৩৪ জন, মোট ৩১৫ জন ছাত্র এবং ২৮৭ জন ছাত্রীসহ সর্বমোট ৬০২ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনকালে প্রধান শিক্ষক এইচএম কামাল বিএ বলেন ‘আশাতীত এ ফলাফল কমিটির সার্বিক নজরদারী ও তদারকিতে শিক্ষক এবং অভিভাবকগণের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। বিশেষতঃ সভাপতির ভুমিকা অতুলনীয়। তাঁর আন্তরিক ও প্রশংসনীয় অবদানে স্কুলটির সর্বত্র-ই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। প্রতিটি ক্লাস রুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ফ্যান লাগানো হয়েছে। অফিসে রুচিসম্মত টেবিল এসেছে। বিভিন্ন আসবাবপত্র ও সরঞ্জাম আনা এবং সংস্কার করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন স্কুল মাঠে বাগানসহ অবকাঠামোগত উন্নতি সাধিত হয়েছে’।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সভাপতি সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ বলেন ‘এসব আসলে আমার একা কোন কৃতিত্ব নয়। এটি টিম ওয়ার্কের মতোই। অত্যন্ত দক্ষ সৎ ও প্রকৃত অর্থেই শিক্ষার জন্য নিবেদিত প্রাণ টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এমদাদ হোসেন চৌধুরীর দিকনির্দেশনায় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বশীল প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্তরিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি অভিভাবক মহলের সহযোগিতায় উক্ত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আগামীতে আরও ভাল ফলাফলের জন্য আমরা পরিকল্পনা মাফিক প্রস্ততি গ্রহণ করেছি’।