আমান উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার) :

এক রাতেই ২১ লাখ ২ হাজার ৮৯৭ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড ।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা সাবরাং ও স্থলবন্দর সংলগ্ন নাফনদীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৮ লাখ ২ হাজার ৮শ ৯৭ পিস ইয়াবা ও একটি নৌবা জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য মূল্য ৫৪ কোটি ৮ লাখ ৬৯ হাজার ১শ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি। এদিকে দমদমিয়া বিজিবি চেকপোস্টে ৫০ পিচ ইয়াবাসহ এক জনকে আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে কোস্টগার্ড সদস্যরা সেন্টমার্টিনের ছেড়াদিয়ার কাছে বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে.কর্ণেল আছাদুদ-জামান চৌধুরী শুক্রবার দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযানের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন।

তিনি জানান, গত ১৫ মার্চ রাতে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান আসার গোপন সংবাদে তার নিজের নেতৃত্বে দুইটি পৃথক দল নিয়ে নাফ নদীতে টহলে গমন করেন। একপর্যায়ে রাত সোয়া ১১টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন নাফনদীতে একটি নৌকায় অভিযান চালিয়ে চালিয়ে বিপূল পরিমাণ ইয়াবা জব্দ করা হয়। তা ব্যাটালিয়ন সদরে নিয়ে গণনা করে ৫ লাখ ৮শ ৯৭ পিচ ইয়াবা পাওয়া যায়। হাবিলদার আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে থাকা অপর টিম ১৬ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে সাবরাং জিনা খাল মুখে নাফ নদী থেকে ১৩লাখ ২হাজার ৮শ ৯৭পিস ইয়াবার চালান জব্দ করেন।

এছাড়া বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় দমদমিয়া বিজিবি সংলগ্ন চেকপোস্ট এলাকা হতে ৫০পিস ইয়াবাসহ মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু থানার নিয়ারবিলের বুজুরুজ মিয়ার পুত্র শেখ আহমদ (২৫) কে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

অপরদিকে কোস্টগার্ড সহকারী গোয়েন্দা পরিচালক লে.কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মারুফ জানান, ১৬ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফ স্টেশনের সদস্যরা সেন্টমার্টিন ছেড়াদিয়ার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এসময় ইয়াবা পাচারকারীরা মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দ ইয়াবার মূল্য ১৫ কোটি বলে দাবী করেছে কোস্টগার্ড।

বিজিবি ও কোস্টগার্ডের উদ্ধারকৃত ইয়াবার চালান গুলো টেকনাফে এপর্যন্ত একদিনে উদ্ধার করা সর্ববৃহৎ চালান। এছাড়া বিজিবি কর্তৃক উদ্ধার ইয়াবার চালান দুটি এপর্যন্ত তাদের উদ্ধার ইয়াবার মধ্যে সর্ববৃহৎ চালান।

নাফনদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে বৃহৎ চালান গুলি আটকের ঘটনায় টেকনাফ জুড়ে তোলপাড় চলছে। স্থলবন্দর এলাকায় ট্রলারে হতে ইয়াবা আটকের ঘটনায় পুরো সংরক্ষিত এলাকা ও তদারকির অভাবে এই পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের চালান খালাস এবং পাচারের ঘটনা ঘটলেও বন্দর কর্তৃপক্ষের কঠোর ভূমিকা না থাকায় কৌশলী মাদক ব্যবসায়ীরা সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৈধ ব্যবসার আড়ালে কতিপয় রাঘব-বোয়ালরা দীর্ঘদিন ধরে এই অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে বলে জানা যায়।