মো: ফারুক, পেকুয়া :

পেকুয়া সিকদার পাড়ার মরহুম মৌলভী ছায়েদুল হক এর সন্তান সালাউদ্দিন আহমেদ। স্কুল জীবনে লেখাপড়া জিএমসি আর শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে। উচ্চ শিক্ষার জন্য চট্টগ্রাম আর ঢাকায় নামিদামি কলেজ আর বিশ^বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। সরকারী চাকরিতে যোগদান করে চাকরিও করেন। এরই মাঝে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এপিএস হিসাবে নিয়োগ পান। ছেড়েদেন সরকারী চাকরি। পরবর্তিতে বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ, সাবেক মন্ত্রীসভার প্রতিমন্ত্রী, বর্তমান বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। বর্তমান সময়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রেবেশের দায়ে পাহাড়ঘেরা রাজ্য মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে মামলা জড়িলতায় অবস্থান করলেও রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে বর্ণাঢ্য জীবন। বাংলাদেশে অবস্থানকালেও অনেক মামলা মোকদ্দমার আসামী এবং জেলও কেটেছেন। সেই সময় আ’লীগ নেতাকর্মীদের দমন নিপিড়নের অভিযোগ থাকলেও সবকিছুকেই চাঁপিয়ে তার নিজ জেলা কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়ন করে কক্সবাজারবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেন। বিশেষ করে পেকুয়াকে উপজেলা আর অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করাই সাধারণ জনগণের মণিকোঠায় স্থান করে নেন।

এছাড়াও বিএনপি যখন নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে টানা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন দলটির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে দলের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেন।

অজ্ঞাতস্থান থেকে পাঠানো তাঁর বিবৃতি ও ভিডিও বার্তা গুলো যখন দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছিল ঠিক তখন ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে ঢাকার উত্তরা এলাকার একটি ভবন থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। সেই থেকে দীর্ঘ একবছর দুইদিন ‘গুম’ থাকার পর ২০১৫ সালের ১২ মার্চ ভারতের পাহাড়ঘেরা রাজ্য মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে গলফ কোর্স ময়দানে চোখ বাঁধা অবস্থায় সালাহউদ্দিন আহমদকে পাওয়া যায়। সেই থেকে অদ্যবধি মামলা জটিলতায় সেখানেই অবস্থান করছেন।

সালাউদ্দিন আহমেদের এই ৪ বছরে গুম আর ভারতে অবস্থান কি ভাবছে তার জন্মস্থান পেকুয়াবাসীরা। দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকার প্রতিবেদক কথা বলেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে। তাদের অভিমত তুলে ধরা হল।

সদর ইউনিয়নের গোয়াখাঁলী এলাকার প্রবীন মুরব্বী উকিল আহমদ বলেন, সালাউদ্দিন আহমেদ পেকুয়ার সন্তান। তিনি যখন থেকে চকরিয়া-পেকুয়া আসন থেকে এমপি প্রার্থী হয়েছেন তাকে ভোট দিয়েছি। বিএনপির প্রতি ভালবাসায় নয় আমি সালাউদ্দিন আহমেদকে ভালবেসে ভোট দিয়েছি। অতিতে তিনি যখন রাস্তা দিয়ে হাটতেন তখন আমাদের সাথে ডেকে ডেকে কথা বলতেন। আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। রাজনীতি বুঝিনা তাকে আমরা অনেক ভালবাসি। তার মত নেতা কোন দলে হাজার বছরেও হবেনা। তাকে সুস্থ্য দেহে ফিরিয়ে পাওয়ার আশা করছি।

চকরিয়া বিশ^বিদ্যালয় কলেজের ছাত্র এফএম সুমন বলেন, ছোট অবস্থা থেকে প্রিয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদকে অনুসরণ করছি। আজ এ সময়ে এ মানুষটির অভাব অনুভব করছি। আশা রাখছি তিনি শীগ্রই দেশের মাঠিতে ফিরে আসবেন।

শেখেরকিল্লা ঘোনা এলাকার বাসিন্দা ছেনুয়ার বেগম বলেন, সালাউদ্দিনকে আমরা অনেক ভালবাসি। রাজনীতি করিনা। তিনি ফিরে আসুক এ কামনা করছি।

ছাত্রদলের সভাপতি এডভোকেট জাহেদ হোসেন বলেন, যখন বয়স অনেক ছোট তখন থেকে প্রিয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদকে ভালবাসি। ছাত্র অবস্থায় তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত হই। আমরা তার অভাব অনুভব করছি। ইনশাল্লাহ বীরদর্পে দেশে ফিরবেন।

যুবদল পেকুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, সালাউদ্দিন আহমেদ এর আদর্শ অনুসরণ করে রাজনীতি করি। রাজনৈতিক প্রতিহিসংসার স্বীকার হয়ে তিনি ভারতে অবস্থান করলেও পেকুয়াবাসীর হৃদয়ে সব সময় থাকে। তিনি সারা বাংলাদেশের বিএনপির বটবৃক্ষ। আমরা প্রিয় নেতার অভাব অনুভব করছি। দ্রুত মামলা জটিলতা শেষ করে দেশে ফিরবেন এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

মহিলা দলের সভানেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পেকুয়ায় শতশত মহিলা সালাউদ্দিন আহমেদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপির রাজনীতি করে। বিগত ৪বছর আমরা তাকে প্রতি ক্ষনে ক্ষনে অভাব অনুভব করছি।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম.বাহাদুর শাহ বলেন, সালাউদ্দিন আহমেদকে অপহরণ করা হয়েছিল। মহান আল্লাহ সহায় আর আমাদের ভাগ্যে ভাল ভারতে তার অবস্থান সনাক্ত হয়েছে। অভাবভুত সবসময় করি। ওখানে মামলা শেষ পর্যায়ে। নির্দোষ প্রমাণ হবেন আমাদের নেতা। ইনশাল্লাহ তাকে বরণ করার জন্য আমরা প্রস্তত।