মোহাম্মদ শফিক :

অবশেষে বীরাঙ্গনা আলমাছ খাতুনের দেখভালের দায়িত্ব নিলেন সদর উপজেলা ইউএনও মো: নোমান হোসেন। এশিয়ান টেলিভিশনসহ ও বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর উক্ত বীরাঙ্গনার মৌলিক চাহিদাগুলোর যোগান দিতে বদ্ধপরিকর তিনি। এরই ধারাবাহিকতায়  সোমবার (০৯ জানুয়ারি) প্রাথমকি সহায়তা স্বরুপ তাকে ঢেউটিন, শীত বস্ত্র, ও একটি নগদ চেক হস্তান্তর করেন। এছাড়া প্রতিমাসে  ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করবেন বলে আশ্বাস দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, এশিয়ান টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ শফিক, কমরেড গিয়াস উদ্দিনসহ অন্যান্যরা।

সদর উপজেলা ইউএনও মো. নোমান হোসেন বলেন, “কক্সবাজারের প্রথম শহীদ ডা. কবির আহমদের স্ত্রী আলমাছ খাতুনকে রাষ্ট্রীয় সব ধরনের সহযোগীতা ও সম্মাননা দেওয়ার জন্য প্রশাসন বদ্ধপরিকর। বীরাঙ্গনা আলমাছ খাতুনের দাবী অনুযায়ী তার বসতি জায়গা বন্ধোবস্ত করে দেওয়ার প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন বলেন, শহীদ কবির আহম্মদের স্ত্রী, আলমাছ খাতুন যেন সম্মাননা পায় তার জন্য সহযোগিতা করা হবে।

উল্লেখ্য, আলমাছ খাতুন হলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজারের প্রথম শহীদ ডা. কবির আহমদের সহধর্মীনি। ১৯৭১ সালের ১২ মে শুক্রবার বিকালে পাকহানাদার বাহিনী তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ৪ বছর বয়সী শাহেনা আকতার ও ৯ মাসের ছেলে নাছির উদ্দিনকে নিয়ে ছুটে যান কক্সবাজারের পুরোনো সিভিল রেস্টহাউস পাকিস্তানি ক্যাম্পে। সেখানে স্বামীর সাথে দেখা করারতো দুরের কথা – কথাও বলতে দেয়নি। বরং তিনিও শারীরিকসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়। পরে কৌশলে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারলেও বাঁচাতে পারেনি স্বামীর জীবন। তখন থেকেই বেচে থাকার তাগিদে ৭১ বছর বয়সেও এখনো অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রতিদিন লাঠিতে ভর দিয়ে কুজো হয়ে সাগর পাড়ে ঝিনুক কুড়ান আলমাছ খাতুন। এগুলো মালা গেথে বিক্রি করেই চলে তার সংসার।