শাহেদ মিজান, সিবিএন:
তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজার জেলা ইজতেমা শুরু হতে যাচ্ছে। ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মাধ্যমে তিন দিন ব্যাপী এই ইজতেমার শুভ সূচনা হবে। শহরের জেলে পার্ক মাঠ-সংলগ্ন পশ্চিমের ১৭ একর জায়গাজুড়ে পাঁচ লাখ মুসল্লী সমাগের লক্ষ্য নিয়ে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।

ইজতেমার আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান, জেলা পর্যায়ে ক্যাটাগরিতে কক্সবাজারে তৃতীয়বারের মতো ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পাঁচ লাখ মুসল্লী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে এই ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। পুরো ইজতেমা স্থলের ১৭ একর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া টেকনাফ, উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার মানুষ ইজতেমায় অংশ নেবেন। এছাড়াও কক্সবাজারে অবস্থানরত দেশের বিভিন্ন স্থানের তাবলিগ জামাতের লোকজন ও বাংলাদেশ অবস্থানরত ওমান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার তাবলিগ জামাতের লোকজন অংশ নেবেন। ইজতেমায় বয়ান করবেন তাবলিগ জামাতের আহলে সুরা মাওলানা মোজাম্মেলুল হক, ছৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ ও কাকরাইল মসজিদের ওস্তাদ মাওলানা মনির বিন ইউসুফসহ দেশবিদেশের আরো বেশ কয়েকজন বক্তা। প্রতিদিন ফযরের নামাজের পর শুরু হয়ে এশার নামাজ পর্যন্ত ইজতেমার বয়ান চলবে। এক্ষেত্রে এশার নামাজ দেরিতে পড়া হবে। শনিবার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শেষ হবে।

ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম জানান, ইজতেমায় মুসল্লীদের প্রয়োজন মাফিক সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার জন্য বসানো হয়েছে ৬’শ টয়লেট, শতাধিক নলকূপ, সাতটি বিশাল আকারের ওজুখানা, পানির জন্য ২২টি মটর। মুসল্লীদের খেদমতের জন্য ইজতেমার কর্তৃপক্ষের এক হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জেলা পুলিশের সাড়ে তিন’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। তাদের নেতৃত্বে দেবেন তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

বুধবার দুপুরে ইজতেমা স্থল রেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে অধিকাংশ প্যান্ডেল তৈরি হয়ে গেছে। দূর-দূরান্তের অনেক মুসল্লী এসে ইজতেমা স্থলে সমবেত হয়েছেন। অন্যদিকে অবশিষ্ট প্যান্ডেলগুলো নির্মাণের জন্য গতকাল প্রায় পাঁচ’শ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। সন্ধ্যার নাগাদ সব প্যান্ডেল নির্মাণ সম্পন্ন হবে জানিয়েছেন ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম। গত ২০ দিন ধরে প্রতিদিন ২’শ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে পুরো প্যান্ডেল তৈরি করেছেন জানিয়েছেন আতাউল করিম। ইজতেমাকে ঘিরে আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরণের দোকান।

ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি আর নৈকট্য লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ইজতেমায় শরিক হন। ইতিমধ্যে অনেক মুসল্লী চলে এসেছেন। প্রথম দিনের দুপুর নাগাদ ৭০ শতাংশ মুসল্লী সমবেত হবেন। শুক্রবার ইজতেমায় সর্বাধিক মুসল্লীর সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি। একই ভাবে শনিবার আখেরি মোনাজাতেও রেকর্ড পরিমাণ মুসল্লী সমবেত হবেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ইজতেমা ও মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে সব ধরণের গোপনীয় নাশকতার আশঙ্কা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারী থাকবে।