ডেস্ক নিউজ:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলীয় টার্গেট বাড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিমতের ভিত্তিতে আসন সংখ্যা ৫২ থেকে বাড়িয়ে ৬২ করেছে দলটি।এরই মধ্যে দলের ‘নির্বাচন কমিশন’ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনসংযোগ বাড়ানো ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের ১৩টি সাংগঠনিক সাতটি অঞ্চলের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

জামায়াতের দায়িত্বশীলরা জানান, চূড়ান্তভাবে কী পরিমাণ আসনে দলীয় প্রার্থী দেবে জামায়াত—এ সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে নির্বাচনে গেলে শেষপর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ নাও হতে পারে জামায়াতের। এ ক্ষেত্রে ২০০১ সালে ২৯টি ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩১টি আসনে জোটগত সমর্থন পেলেও এবার সংখ্যাটি আরও কমতে পারে। ২০০৮ সালে সিরাজগঞ্জ ও চট্টগ্রামের একটি আসনে প্রার্থী দেয় জামায়াত। আসন সংখ্যা কমানো-বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে এখনই চিন্তিত না হয়ে প্রার্থিতার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে জামায়াতের নির্বাচন কমিশন থেকে।

সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত প্রায় একমাস আগেও ৫২টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল জামায়াতের। তবে শেষ একমাসে তৃণমূলের অভিমতের ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২-তে। এর মধ্যে শুধু বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলে ৮টি আসনে প্রার্থিতা দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কেন্দ্রের ‘নির্বাচন কমিশন’এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এই সংখ্যাটি নির্ধারিত হয়েছে।

দলটির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বর্তমানে জামায়াতের একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম এই কমিটির চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। কমিটিতে আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছেন। তৃণমূলের অভিমত নিয়ে এই ‘নির্বাচন কমিটি’ প্রার্থী অনুমোদন করে।

গত ১৬ নভেম্বর জামায়াতের বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাইলে দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘জামায়াত সাংগঠনিক কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত। আর গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচন নিয়েও প্রস্তুতি আছে।’

১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিএনপি-জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকেও খালেদা জিয়াকে জামায়াত নেতা আবদুল হালিম গণসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন। ওই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়েও পরিকল্পনা জোরদার করতে প্রস্তাব দেওয়া হয় জামায়াতের পক্ষ থেকে।

জামায়াতের চট্টগ্রাম বিভাগীয় অঞ্চলের একজন দায়িত্বশীল নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিকভাবেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত আসনগুলোয় কাজ এগিয়ে নিতে, জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় ‘নির্বাচন কমিশন’-এর পক্ষ থেকে।’

জামায়াতের একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই জামায়াতের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা তাদের নির্বাচনি এলাকাগুলো সফর করে এসেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কোনও দায়িত্বশীলই স্বপরিচয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মজলিসে শুরার সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কত আসনে ভোট করব, জামায়াত কয়টি আসনে প্রার্থী দেবে, এখনও ঠিক হয়নি। আগে নির্বাচনের সময় আসুক, এরপর দলের নীতিনির্ধারকরা ঠিক করবেন।’