হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফের মহেশখালিয়া পাড়ায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে মারা গেল দেলাওয়ার হোসাইন প্রকাশ ডালু (২০) নামে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার সময় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাজমপাড়া বাজারে ঘটনাটি ঘটে।

নিহত দেলাওয়ার হোসাইন প্রকাশ ডালু টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়া এলাকার আবদুস সালাম ফকিরের পুত্র এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এলএলবির ছাত্র।

বুধবার রাত ৯টায় এরিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত উক্ত ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাঈন উদ্দীন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, সন্ত্রাসীরা ডালুকে ধারালো ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তাকে গুরুতর অবস্থায়  উদ্ধার করে টেকনাফ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

তবে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। টেকনাফে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ জাকারিয়া জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বাম পাশে পেছনে গভীর ক্ষত রয়েছে।

নিহতের ভাই তজিল আহমদ জানান, হামলার শিকার হওয়ার পরে দেলোয়ার তাকে মোবাইল করে জানায় ভাই আমি মারা যাচ্ছি। এ কথা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ছুরিকাহত ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। তিনি হত্যাকােন্ড সরাসরি জড়িত এলাকার ৩ যুবকের নাম জানতে পেরেছেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, কিছুদিন আগে এলাকার বর্তমান ইউপি মেম্বার হামিদের সাথে তার ভগ্নিপতি আবুল বশরের দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। এতে উভয় পক্ষে তিন জন মারাত্মক জখম প্রাপ্ত হয়ে ২ জন পঙ্গুত্ব বরন করেন। আবুল বশর ভগ্নিপতি হলেও ওই ঘটনার সাথে তার জড়িত ছিলনা দাবী করে তজিল জানান আমার ভাই পড়ালেখা করার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন খান জানান, নিহতের লাশের সুরতহাল রিপোট তৈরীর পর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, থামানো যাচ্ছেনা টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়া-হাজামপাড়ার সহিংস ঘটনা, সংঘাত ও দ্বন্ধ। বরং দিন দিন বাড়ছে। ইতিমধ্যেই বশর ও হামিদ গ্রুপের দ্বন্ধের কারনে পা কাটা ২জন, গুলিবিদ্ধ ২ জনসহ আহত হয়েছেন অনেকে। মহেশখালিয়া পাড়ায় আগামীতে আরও মারাতœক খুন-খারাবির আশংকা দেখা দিয়েছে। মহেশখালিয়া পাড়া এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতি রাতেই গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আগামীতে আরো রক্তাক্ত ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে গত ২৫ আগষ্ট রাত ১০টায় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল হামিদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। টেকনাফ পানবাজার এলাকা আল মদীনা নামক একটি পার্টস এর দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আবদুল হামিদ মেম্বারের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি বর্তমানে বাড়ীতে বিশ্রামে রয়েছে।

অপরদিকে গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় হাজম পাড়া এলাকায় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশ খালিয়া পাড়ার নুরুল ইসলাম মেম্বার গুলিবিদ্ধ ও আবুল বশরের পা কর্তনের ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আবদুল হামিদ মেম্বার ও বশর গ্রুপের মাাঝে এ ঘটনা বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হাজম পাড়া বাজরের রাইহান ফার্মেসীতে অসুস্থ আবুল বশর ঔষধ নেওয়ার সময় সাদা নোহা থেকে একদল লোক আকস্মিক এসে আবুল বশরকে দা, কিরিছ দিয়ে হামলা করে পালিয়ে যায়। এতে আবুল বশরের বাম পা কর্তন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাতœক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সাবেক মেম্বার নুরুল ইসলামের বাসায় গিয়ে দরজা থেকে গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। গুলির আঘাতে ডান পা ক্ষত বিক্ষত নুরুল ইসলাম মেম্বারকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। এভাবে একটার পর একটা অঘটন ঘটছে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়া ও হাজামপাড়া এলাকায়। সন্ত্রাসীরা কখন কার উপর চড়াও হয় এ আশংকায় ভুগছেন এলাকার মানুষ।