গোলাম আজম খান:

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফে ১২টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ত্রাণের পাশাপাশি সরকারী ও বেসরকারীভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। কুতুপালং ও বালুখালীতে ৩হাজার একরের নতুন ক্যাম্পে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৪ হাজার ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ২০ টি প্রশাসনিক ব্লকে ভাগ করে স্যানিটেশন, টিউবওয়েল সহ সকল প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীর তত্তাবধানে ২৯ কি.মি. দৈর্ঘের ১০ টি সড়কের ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে উখিয়া, টেকনাফ ও রামুতে ১১টি পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে। ক্যাম্প থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবার সময় এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ২১৩ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বান্দরবানে থাকা ১৭ হাজার মিয়ানমার নাগরিকের মধ্যে ৭ হাজার জনকে উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকী ১০ হাজার জনের স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এদিকে এইসব নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান আল-মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের এক ঝাঁক আলেম ওলামা। তারা দ্বিতীয় দফায় গতকাল শুক্ররবার ও পরশু বৃহস্পতিবার ফের একই ক্যাম্পে ছুটে আসেন। প্রথমবার তিনদিন ব্যাপী খাদ্য সামগ্রী, চিকিৎসা সেবা, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার বৃহৎ পরিসরে বিপন্ন ৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে এবারের বিতরণ করা হয় চাল,ডাল,তৈল,পিয়াজ আলু লবণসহ শুকনো খাবার-দাবার। একসঙ্গে এতকিছু পেয়ে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো যেন খুশিতে আত্মহারা। চট্রগ্রামের নানুপুর জামেয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা শাহ জমির উদ্দিন (রাহ:) প্রতিষ্টিত আলমানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উখিয়া কুতুপালং বি ব্লকের ৫/৩/৪ নম্বরে নতুন আসা ৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এর আগে বিপদগ্রস্ত এসব রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে প্রথমবার তিনদিন ব্যাপী বিতরণ করা হয় পরনের কাপড়, জরুরি ওষুধ ও শুকনো খাবার-দাবার। এছাড়া ফ্রি চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ঔষূধ দেয়া হয়। এছাড়া গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনিরা পারভিনের নেতৃত্বে ৬ জন গাইনি ডাক্তারে বিশেষ টিম গর্ভবতী রোহিঙ্গা মহিলাদেরকে সন্তান প্রসবের সহয়তা দেয়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাদেরকে চিকিৎসা সহয়তা দেয়। আলমানাহিল ওয়েলফিয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন বিন জমির জানিয়েছেন সংস্থার পক্ষ থেকে ত্রাণ পেয়ে মিয়ানমার মগ সেনাদের অমানুষিক নির্যাতনে মাতৃভূমিহারা রোহিঙ্গারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সেনা মোতায়েনের ফলে ত্রান কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরে আসায় সবার মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। উক্ত সংগঠনের পক্ষ থেকে সহয়তা করেন, চট্রগ্রামের নানুপুর জামেয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী,মাওলানা কুতুবদ্দিন বিন জমির,মাওলনা মাঈন উদ্দিন বিন জমির,মাওলানা শিহাব উদ্দিন বিন জমির,মাওলানা শরীফ উদ্দিন বিন জমির, মাওলানা মহিউদ্দিন বিন সালাহ উদ্দিন। মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা মুমিব,মাওলনা আনোয়ার শাহ নগরী,দিদার প্রমুখ।