বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমকে স্তব্ধ করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ অভিযোগ করেন।

‘গণমাধ্যম এখন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসন মহামারী আকার ধারণ করেছে। এখন গণমাধ্যমকে আবারও স্তব্ধ করে দিতে মরিয়া’, বলেন রিজভী।

‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমান সরকারও সত্যপ্রকাশের প্রতিশোধে আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে, গণমাধ্যমের ওপর অলিখিত সেন্সরশিপ আরোপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। শুধু বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে সারা দেশে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও গুমের শিকার হয়েছেন। এখন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের হাতে সহস্রাধিক সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল-জুলুম ও দমন-নিপীড়ন তো চলছেই’, যোগ করেন রিজভী।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘গতকাল পরিকল্পিতভাবে সরকারের নির্দেশেই সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সশস্ত্র হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলে বেড়িয়েছে, তোরা আসছিস কেন? ওপরের নির্দেশ আছে তোদের ওপর হামলা করার। সংবাদ সংগ্রহের তোদের শখ মিটিয়ে দেবো। এই বলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে সাংবাদিকদের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয়। এ সময় সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িসহ বহরের গাড়িগুলোতে তাণ্ডবলীলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার নিন্দা জানানোর ভাষাও আমাদের নেই।’

রিজভী বলেন, ‘ভীতু ও কাপুরুষ সরকার জনতার ঢল যাতে মানুষ দেখতে না পায়, সে জন্য সকল টেলিভিশন ও রেডিওতে বেগম জিয়ার খবর লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। গতকাল রাতে সব বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও কর্তৃপক্ষকে সরকারের লোকজন হুমকি দিয়ে বেগম জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় লাখো মানুষের ঢলের দৃশ্যের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।’

‘গণমাধ্যমের বেশ কয়েকটি গাড়িতে কাপুরুষোচিত হামলায় গুরুতর যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা হলেন—একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার শফিক আহমেদ, যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক হাসান মোল্লা, নয়া দিগন্তের সাংবাদিক মঈনউদ্দিন খান, প্রথম আলোর সাংবাদিক সেলিম জাহিদ, ফটোসাংবাদিক আশরাফুল আলম, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মাসুম, যুগান্তর পত্রিকার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান হাবিব, বিডিনিউজ অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক সুমন মাহমুদ, কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক শফিক শাফি, বৈশাখী টিভির রিপোর্টার গোলাম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান শিপলু, এনটিভির সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মাহমুদ, ক্যামেরাম্যান অজিত আইচ তাপস এবং ব্রডকাস্ট টেকনিশিয়ান মো. সাঈদ, ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান আপন আহমেদ সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং সেখানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। হামলায় একাত্তর টিভির রিপোর্টার শফিক আহমেদ গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁকে নির্দয়ভাবে মারধর করার জন্য তিনি এখন মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন।’