মো: ফারুক, পেকুয়া
পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলা পাড়া এলাকার আহমদ ছফার পুত্র আনসার উদ্দিন। পিতার তেমন সহায় সম্পদ না থাকায় জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে বড় হতে হয়েছে তার ও ভাই বোনদের। এক সময় খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় ও পারিবারিক সমস্যায় মামলার আসামীও হন তিনি। তারপর জীবনের মোড় ঘুরাতে কাজ শুরু করেন লবণ পরিবহনের শ্রমিক হিসাবে। সেই শুরু, আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত লবণ ব্যবসায়ী। তার চাষকৃত লাখ লাখ টাকার লবণ পেকুয়ার রাজাখালী থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে থাকে। যার কারণে সরকার যেমন পাচ্ছে রাজস্ব তেমনি তার কারণে অনেক পরিবার এর সন্তানের কর্মসংস্থান হওয়ায় তাদের পরিবারও স্বাবলম্বী হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে আনসার উদ্দিন জানান, পিতার পরিবারে আমরা সাত ভাই বোন। তার মধ্যে আমি ১ম সন্তান। পিতার এক সময় বিভিন্ন জনের ব্যবসা প্রতিষ্টানে কাজ করতো। তারপরও ছোটখাট ব্যবসা করেন। এরপর আমি ১ম সন্তান হওয়ায় সংসারের হাল ধরতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করি। এক পর্যায়ে সংসারের খরচের লাগাম টেনে ধরতে লবণ চাষ শুরু করি। রাজাখালীর ওয়াকফ ষ্টেটের লবণ বর্গা নিতে থাকি। লবণের দাম তখন অনেক কম ছিল। তারপরও লবণ চাষ ছাড়িনি।

সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় বর্তমান সরকারের আমলে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা লবণ চাষীদের জন্য আলিদা নীতিমালা ঘোষনা করেন। বিদেশ থেকে লবণ আমদানীও বন্ধ করে দেন। তারপর তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। মণ প্রতি লবণের দাম দেড়শত টাকা থেকে ৬শ টাকা হয়ে যায়। ঠিক একই ভাবে শ্রমিকের দামও তাদের চাহিদা মতো হয়ে পড়ে। তাদের ভাগ্যের চাকাও ঘুরে যায়। এখন আমি লবণ বর্গা নেওয়ার পাশাপাশি কয়েক খানি লবণ মাঠের মালিক হয়। ইতিমধ্যে আমি সন্তানের জনক। তারাও লেখাপড়া করছে। আর আমার কাজের সততা পরিশ্রম দেখে এরশাদ আলী ওয়াকফ ষ্টেটের ইজারাদার আমাকে তাদের কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ দেন। সেখানেও আমি সততার পরিচয় দেওয়ায় ইজারাদার হানিফ চৌধুরীও মাসে মাসে সততার পুরুস্কার দেন। যার কারণে আমার আর্থিক অবস্থা অনেক ভাল। আর আমার সাথে কাজ করা শ্রমিকদেরও প্রাপ্য মজুরী সাথে সাথে দিয়ে দিই। যার কারণে তারা আমার সাথে কাজ করতে কার্পন্য করে না।

তিনি এ সময় দুঃখ করে বলেন, আমার সফলতায় ইর্ষান্বিত হয়ে রাজাখালী এলাকার কিছু চিহিৃত সন্ত্রাসী অপপ্রচারে নেমেছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে ঘায়েল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইনশাল্লাহ আমি সততার সাথে কাজ করলে কেউ ক্ষতি করতে পারবেনা।

তার সাথে থাকা লবণ শ্রমিকের মাঝি মো: রশিদ, জহির, শ্রমিক ওসমাণ ও নেজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের দেখা আনসার উদ্দিন একজন সফল ব্যবসায়ী। তার সাথে আমরা কাজ করে থাকি। কখনো অন্যায় আবদার সে আমাদের সাথে করেনা। তার লবণ পরিবহণ করে ইতিমধ্যে আমরা স্বাবলম্বী হয়েছি।

ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর আনসার উদ্দিনের ব্যাপারে বলেন, তিনি অতিতে কেমন ছিলেন তা আমি বলতে পারব না। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি লবণ চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করায় দৃষ্টান্ত হয়ে এলাকার অনেকে খারাপ অবস্থা থেকে ফিরে এসে লবণ চাষ করছে। আর বর্তমান আ’লীগ সরকার লবণের দাম বৃদ্ধি করে দেওয়ায় তারা অনেক লাভবান হচ্ছে।