ডেস্ক নিউজ:

বিভিন্ন দেশে তেলাপিয়া মাছে একটি বিশেষ ধরনের ভাইরাস আক্রমণ করছে। ‘তেলাপিয়া লেক’ নামের ওই ভাইরাস দক্ষিণ আমেরিকা থেকে শুরু করে আফ্রিকা-এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সম্প্রতি এই রোগের ব্যাপারে বিশ্ববাসীকে সাবধান করে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। এই ভাইরাস যেসব দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে তেলাপিয়ায় মড়ক দেখা দিচ্ছে বলে সংস্থাটি তাদের সতর্কবার্তায় উল্লেখ করেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মৎস্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত তেলাপিয়া মাছের গায়ে ফোসকা পড়বে, এরা খাবার কম খাবে। এমন কোনো মাছ বাংলাদেশের কোনো খামারে তাঁরা পাননি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন খামারে মাছের পরীক্ষা করেন। সেখানে এ ধরনের কোনো রোগাক্রান্ত মাছ পাওয়া যায়নি। তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে ইন্দোনেশিয়া বা থাইল্যান্ড থেকে তেলাপিয়া মাছের পোনা নিয়ে আসছে কি না, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

তবে এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের চতুর্থ তেলাপিয়া উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশও এই ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হতে পারে। ইতিমধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে এমন দেশ থেকে যাতে অন্য দেশগুলো তেলাপিয়া আমদানি না করে, সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরিফ আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলত অল্প জায়গায় বেশি মাছ চাষ করলে ও পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ না করলে এ ধরনের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বেশি হয়। আমরা এ ব্যাপারে চাষিদের সচেতন করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।’

এফএওর হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে বছরে ৩ লাখ ৩৮ হাজার টন তেলাপিয়া উৎপাদিত হয়। আর সবচেয়ে বেশি তেলাপিয়া হয় চীনে, ১৮ লাখ টন। বিশ্বে বর্তমানে ৬৭০ কোটি ডলারের তেলাপিয়া মাছ আমদানি-রপ্তানি হয়। এই রোগের কারণে বিশ্বে তেলাপিয়া বাণিজ্যে বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে বলে সংস্থাটি সতর্কতা জারি করেছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রায় চার লাখ টন তেলাপিয়া উৎপাদিত হয়। এই মাছকে দেশের গরিব মানুষের প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস হিসেবে দেখা হয়। দেশে উৎপাদিত মোট মাছের ১০ শতাংশ এই তেলাপিয়া মাছ।