আবদুল মজিদ , চকরিয়া :

চকরিয়ায় মৎস্য ঘেরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে নুরুল আমিন (৩৫) নামের এক মৎস্যঘের কেয়ারটেকার নিহত হয়েছে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত ২০-২৫ রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগর ঘোনাস্থ বালুচিড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল আমিন চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগর ঘোনার ৫নং ওয়ার্ডের মৃত জহির আহমদের ছেলে।

এসময় সশস্ত্র ডাকাতের মারধরে ঘের মালিক মীর কাশেম (৩৮) নামে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে চকরিয়া ইউনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত মীর কাশেম চিরিংগা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও রশিদ আহমদের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা ও চরণদ্বীপের মৎস্য ঘের সমূহ দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে নাসির বাহিনী ও নুরুল আমিন গং। এরই জের ধরে বুধবার ভোররাতে নাসির বাহিনী ও নুরুল আমিন গংয়ের মধ্যে অন্তত ২০-২৫ রাউন্ড গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে নাসির বাহিনীর উপর্যপুরী গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন নুরুল আমিন।

নিহত নুরুল আমিনের চাচা রফিকুল ইসলাম ও মা জাহেদা বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, ছেলে নুরুল আমিন স্থানীয় মীর কাসেম মেম্বারের মৎস্যঘেরে কেয়ারটেকার হিসেবে চাকুরী করতেন। ইতিপূর্বে জিয়াবুলের ইন্ধনে নাসির বাহিনী, রাইফেল পটু, বাহাদুর, এমরান, আবদুস সালাম, আবু বক্করসহ ২০-২৫জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মীর কাসেমের মালিকানাধীন বালুচিড়া মৎস্যঘেরটি জবর দখলে নিতে কয়েকদফা চেষ্টা চালিয়েছে। ছেলে নুরুল আমিন ওই ঘেরটি দেখবাল করায় এতদিন দখলে নিতে পারেনি। ফলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বুধবার ভোর রাতে নুরুল আমিনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। নুরুল আমিনের সংসারে স্ত্রী ও ২ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। নুরুল আমিন শট জাল নিয়ে মাছ ধরে পরিবারের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন। এনিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নুরুল আমিন হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে গতকাল ভোররাতে থানার এসআই তানভীর, এসআই আহসান, এসআই আবদুল খালেক ও এসআই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একদল পুলিশের একটি ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে নিহত নুরুল আমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট তৈরী শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ নানা অপরাধের অভিযোগে অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গোলাগুলির ঘটনায় অপরপক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া ডাকাত সর্দার নাছির উদ্দিনসহ তাঁর সহযোগিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।