মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ’কে জেলকোড ও কারাবিধি মতে কারাগারে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ দিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। আসামী প্রদীপ কুমার দাশ’কে কারাগারে বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ দিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে তার আইনজীবীর আবেদন এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্বাবধায়ককে এ নির্দেশ দেন।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার এম. নুরুল কবির সিবিএন-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণকালে এ আবেদনটি করা হয়েছিলো। সেরেস্তাদার এম. নুরুল কবির আরো জানান, আসামী মোহাম্মদ আইয়াজ প্রকাশ আয়াজ’কে অসুস্থ বলে দাবী করে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে তার আইনজীবী আদালতে আবেদন করেন। বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আবেদনটি শুনানি করে আসামী আয়াজ প্রকৃতপক্ষে অসুস্থ হলে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্বাবধায়ককে অনুরূপ নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২ দফায় মোট ৭ কার্যদিবসে আদালতে ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করা হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন করে আগামী ২০-২২ সেপ্টেম্বর একটানা তিনদিন তৃতীয় দফায় মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) সন্তোষ বড়ুয়া সিবিএন-কে জানান, এ মামলায় ৮৩ জন চার্জসীট ভুক্ত সাক্ষী রয়েছে। চলতি বছরের গত ২৭ জুন ফৌজদারী দন্ডবিধির ৩০২/২০১/১০৯/ ১১৪/১২০-খ/ ৩৪ ধারায় সকল আসামীর উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যার পাঁচদিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার তাঁর বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর : এসটি-৪৯৩/২০২১ ইংরেজী। যার জিআর মামলা নম্বর : ৭০৩/২০২০ ইংরেজি। যার টেকনাফ মডেল থানা মামলা নম্বর : ৯/২০২০ ইংরেজি।

এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ৮৩ জন সাক্ষী সহ আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করেন র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।