আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) লেকের পানিতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার দৌলতপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পানির চাপে লেকের বাঁধ ভেঙে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ,কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে মধ্যরাতে লেকের পানি ছেড়ে দিয়েছে।
এদিকে,ক্ষতিপূরণের দাবিতে বুধবার দুপুরে কেইপিজেডের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম,আওয়ামী লীগ নেত্রী মোমেনা আক্তার ও স্থানীয় বাসিন্দা মো.শহীদুল্লাহ বক্তব্য দেন। তারা বলেন,কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ অতীতেও অনেকবার লেকের পানি ছেড়ে এলাকাবাসীর ক্ষতি করেছে। এ বিষয়ে তাদের বারবার বলার পরও কর্ণপাত করে না। পরিকল্পিত পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা না করে তারা এলাকার ক্ষতি করছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে আর সহ্য করা হবে না। পানি চলাচলের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেও হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন,প্লাবিত এলাকায় অসংখ্য ঘরবাড়ি,দোকানপাট,ক্ষেতের ফসল,পোল্ট্রি ফার্ম ও পুকুর ভেসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির ঢলে বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশ এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৩ শতাধিক পরিবারের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তারা।
ঘটনার দিন রাতে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা। এ সময় ক্ষোভে স্থানীয়রা কেইপিজেড অফিস ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানায়। পরে স্থানীয় লোকজন কেইপিজেডের গাড়ি নিয়ে ভাঙন এলাকায় ইটের খোয়া ফেলে পানি ঠেকানোর চেষ্টা চালায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন,‘আমরা রাতে ঘুমিয়ে পড়ছি। হঠাৎ দেখি বেডরুমে পানি ঢুকছে। বেরিয়ে দেখি কোনো ঝড়-বৃষ্টি নেই। পরে দেখি পশ্চিম দিক থেকে পানি সামনে আসছে। সবাই বেরিয়ে এগিয়ে গেলে দেখা যায়, কেইপিজেডের লেকের পানি ছেড়েছে।’
বড়উঠান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মন্নান খান বলেন,কেইপিজেড লেকের পানিতে প্লাবিত হয়ে অনেক কাঁচাঘরের দেয়াল ভেঙে গেছে। এলাকার অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে ভেসে অন্তত ৩ শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন,আমরা কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি। এরপরও পরিকল্পিতভাবে পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। জেলা প্রশাসক মহোদয়কেও বিষয়টি জানিয়ে সুরাহা হয়নি। কেইপিজেডের এ ঘটনা নতুন নয়,আরও অনেকবার এমন হয়েছে। আমরা এ অবস্থার স্থায়ী সমাধান চাই।
কেইপিজেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মুশফিকুর রহমান বলেন,পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টির কারণে লেকের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির চাপে একপর্যায়ে বাঁধের এক স্থান ভেঙে যায়। তবে ভাঙন এলাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কেইপিজেড অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে।