অনলাইন ডেস্ক : ‘চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, এটা ব্র্যান্ডের নাম। মিলাররা বিভিন্ন জাতের ধান ছাঁটাই করে এসব ব্র্যান্ডের চাল বাজারজাত করছে।’

আজ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ চাল খেতে চাইলে লাল চাল খেতে হবে। চকচক করলেই সোনা হয় না, এটা বোধ হয় আমরা ভুলে গেছি। চকচকে চাল খেতেই আমরা পছন্দ করি। আর ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিয়ে কারসাজির আশ্রয় নেয়। তারা বিভিন্ন জাতের চাল কেটে-ছেঁটে এসব চাল প্রস্তুত করে। চাল যত বেশি পলিশ করা হয় দামও তত বেশি হয়, সেটা প্যাকেটজাত করলে দাম আরো বেশি হয়। চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, এটা ব্র্যান্ডের নাম। মিলাররা বিভিন্ন জাতের ধান ছাঁটাই করে এসব ব্র্যান্ডের চাল বাজারজাত করছে।

খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মিনিকেট চালের বিষয়ে সার্ভে করতে আমাদের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছিল, সেই রিপোর্টটি আমরা হাতে পেয়েছি। মিনিকেট আসলে একটি ব্র্যান্ডের নাম। পলিশ, ফাইন পলিশ, মিডিয়াম পলিশের মাধ্যমে মিলাররা এই ব্র্যান্ডের চাল তৈরি করে বাজারজাত করে।

মন্ত্রী বলেন, এটি চাইলেই বন্ধ করা সম্ভব নয়। মিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে একই জাতের ধান পায় না। কৃষকরা একই বস্তায় বিভিন্ন জাতের ধান পুরে মিলারদের সরবরাহ করেন। সেখানে জাতের স্বকীয়তা থাকে না। এরপর মিলাররা তা পলিশ করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বাজারজাত করে। তাই এটি চাইলেই বন্ধ করা যাবে না, তবে ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ১৮টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং মোট ৪৮৬টি সংস্থা কাজ করছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের সমন্বয়ের কাজ করছে।’

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত নজরদারি করা হচ্ছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের তিনটি টিম বিভিন্ন এলাকায় মনিটরিংয়ে বের হয়, ২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এই পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ৯ হাজার ৪৭৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। অভিযানে কারো ত্রুটি পাওয়া গেলে জরিমানাসহ বিভিন্ন শর্ত পূরণে নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।’

স্ট্রিট ফুড প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, ‘স্ট্রিট ফুড এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। পৃথিবীর উন্নত দেশেও স্ট্রিট ফুড রয়েছে। তবে আমাদের দেশের স্ট্রিট ফুড হাইজেনিক না। এটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, অনেককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সচেতনতা বাড়াতে টিভিসি তৈরি করা হয়েছে, রেস্তোঁরা প্রবিধানমালা তৈরি করা হয়েছে, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে এটি আইন হলে স্ট্রিট ফুডকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
– কালেরকন্ঠ