এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

করোনা সংক্রমণে সুচিকিৎসার অভাবে নিশ্চিত জীবনহানি থেকে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৬ লাখ জনসাধারণকে বেঁেচ থাকার সুন্দর জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখাচ্ছেন চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর মানবিক কল্যাণে অতিসহসা চকরিয়া উপজেলায় স্থাপিত হতে যাচ্ছে করোনা রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিতে একটি আধুনিকমানের ‘পিসিআর ল্যাব’। আর ইউএনও সৈয়দ সামসুল তাবরীজের আহবানে সাড়া দিয়ে করোনা রোগীদের কল্যাণে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে সাবির্ক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার ঘোষনা দিয়েছেন চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, চকরিয়ায় করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে আধুনিকমানের পিসিআর ল্যাব স্থাপনে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর আহবানের প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও সমাজের শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের অংশগ্রহনে ফান্ড (তহবিল) গঠন পুর্বক কার্যক্রমটি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ইতোমধ্যে অনেকে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের অনুপ্রেরণায় গঠিত পিসিআর ল্যাব স্থাপন তহবিলে অনুদানের সহায়তা দিতেও শুরু করেছেন। সর্বশেষ রোববার ১৯ জুলাই চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের একদিনের বেতন থেকে ইউএনও’র কাছে জমা দিয়েছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ১৩ টাকার নগদ অনুদান।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে রোববার বিকালে অনুদানের টাকা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএনও সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর হাতে হস্তান্তর করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার।

চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার বলেন, করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের আহবানে সাড়া দিয়ে চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং উপজেলার ১৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৯০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এগিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, আমার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৯৯০ জন শিক্ষক একদিনের বেতন থেকে ৫ লাখ ৮ হাজার ১৩ টাকা নগদ অনুদান দিয়েছেন। রোববার চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অনুদানের নগদ ৫ লাখ ৮ হাজার ১৩ টাকা ইউএনও স্যারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, করোনা সংক্রমণে প্রতিনিয়ত মৃত্যু ঝুঁিক বাড়ছে। মফস্বলের জনপদ চকরিয়া থেকে যাতে ভবিষ্যতে কোন করোনা রোগীকে অন্যত্র গিয়ে সুচিকিৎসা নিতে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেইজন্য বাড়ির কাছে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এটি স্থাপিত করা গেলে একদিকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতাল কিংবা মালুমঘাট খ্রীস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়বে।

তিনি বলেন, উদ্যোগটি সফল করতে প্রায় দুই কোটি টাকা প্রয়োজন। আপাদত ল্যাবটি মালুমঘাট খ্রীস্টান হাসপাতালে স্থাপনের সিদ্বান্ত আছে। এইজন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে একটি ফান্ডও (তহবিল) গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম মহোদয়ও এখানে একটি বরাদ্দ দিয়েছেন। সমাজের বিত্তশালী দানশীল ব্যক্তি থেকে শুরু যে কেউ উপজেলা প্রশাসনের তহবিলে সহযোগিতা পাঠাতে পারবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবেও পরিচিতজন বন্ধুমহল সবার কাছে বিষয়টি শেয়ার করছি।

ইউএনও সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, সর্বসাধারণকে উৎসাহ দিতে সবার আগে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন থেকে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ রোববার তহবিলে জমা দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের একদিনের বেতন থেকে নগদ ৫ লাখ ৮ হাজার ১৩ টাকার অনুদান।