বাংলা ট্রিবিউন

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের সাজা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে, আসামির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

এর আগে গত ১০ জুলাই উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ মামলাটি যে কোনও দিন রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। পরে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় তোলা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন। আপিলে তার খালাসের পক্ষে যুক্তি রয়েছে প্রায় ১১৩টি। ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল দায়ের করা হয়।

এটিএম আজহারুল ইসলামের মূল আপিল আবেদনে ৯০ পৃষ্ঠার সঙ্গে ১১৩টি গ্রাউন্ডসহ মোট দুই হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আবেদন জমা দেওয়া হয়।

আপিল দায়েরের পর তার আইনজীবী শিশির মুহাম্মদ মনির সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপিলে আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করেছি, তিনি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এ মামলায় সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্দোষ প্রমাণ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৬ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি অনুযায়ী এটিএম আজাহারের বিরুদ্ধে আনা হত্যা, গণহত্যার অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে প্রসিকিউশনের আইনজীবীরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রসিকিউশনের ৪ ও ২৫ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি অনুযায়ী ডকুমেন্ট তৈরি করে তারা (প্রসিকিউশন) নিজেদের মতো করে মামলা সাজিয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন।

এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ছয়টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। আর পাঁচ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর জেল ও ছয় নম্বর অভিযোগে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হয় তাকে। এছাড়া এক নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে রায়ে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল।