শাহীন মাহমুদ রাসেল:
অনেকটা হাসি মুখেই সকাল সকাল বাজার করতে এসেছিলাম। আলু, বেগুন, মুলা, আঁদা, রসুন সব কিছুই ক্রয় করা হয়েছে। বাকী ছিলো শুধু পেঁয়াজ। পেঁয়াজের কথা মনে হতেই মনটা বেশ খারাপ হয়ে যায়। সব কিছু কিনেই যত টাকা লাগছে না, শুধু পেঁয়াজ কিনতেই খরচ করতে হচ্ছে তার থেকেই বেশী। দেশী পেঁয়াজ ১১০ দশ টাকা আর ভারতীয় ৯৫ টাকা। এতদিন জানতাম পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখে জল আসতো, এখনা দেখি দাম শুনেই চোখে জল আসা শুরু করেছে।
এই প্রতিবেদককে এভাবেই কথা গুলো বলছিলেন উপজেলা বাজারে কাঁচাবাজার করতে আসা ফরিদ (৩০)। শনিবার বিকেলে বাজার করার সময় কাঁচা বাজারের পন্যের দাম নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পাশে থাকা অপর এক ক্রেতা সোহেল রানা(৩৫) বলেন, বাজারে আসলেই আগের তুলনায় শুধু পেঁয়াজের জন্যই আলাদা বাজেট নিয়ে আসতে হয়। অন্যান্য জিনিস নাগালের মধ্যে থাকলেও শুধু পেঁয়াজের ক্ষেত্রে এমন অস্থিরতা কবে যে স্থির হবে কে জানে?
কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন বাজার গুলোতে শীত কালীন সবজি গুলোর দাম নাগালে থাকলেও শুধু বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দাম। জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশী পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১ শত ১০ টাকায় আর ভারতীয় আমদানী করা পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০০ টাকা বিক্রয় হচ্ছে। তাছাড়া কখনো কোন কোন বাজারে টাকা দিয়েও মিলছেনা পেঁয়াজ। এমনটাই অভিযোগ ক্রেতাদের।
এদিকে বেগুন বাজার ভেদে প্রতিকেজি টমেটো প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিকেজি পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁডস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ১২০ টাকা, কচুরছড়া ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কলা ২৫ থেকে ৪০ টাকা হালি, লাউ প্রতিপিস ৫০ থেকে ৮০ টাকা, জালিকুমড়া প্রতিপিস ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। প্রতি আঁটি লালশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলার শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুমড়ার শাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, কলমিশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়।
সদর উপজেলার খরুলিয়া বাজারে শাহজান আলী(৫০) নামে এক দিনমজুরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শাক-সবজির দাম মোটামুটি। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বেশী। আর সব কিছুর আগে দরকার পেঁয়াজ। যেটা সব ধরনের তরকারীতে ব্যবহার করা হয়। কিন্ত বাজার করতে এসে যদি পেঁয়াজ কিনতে এত টাকা খরচ করতে হয় তাহলে তো অন্যান্য খরচ কিনতে আমাদের মত দিনমজুরদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
এ ব্যাপারে শহরের বড় বাজারের কাঁচামাল আড়ৎদার আব্দু শুক্কুর বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজে আমদানিগত কিছু সমস্যার কারনে এবং পাশাপাশি দেশী নতুন পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে উঠতে আরো বিলম্ব হওয়ায় হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেই দাম অনেক কমে যাবে বলে তিনি জানান।