প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজারের বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন, জেলা নেজামে ইসলাম পার্টির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, কক্সবাজার ইসলামী সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, রাজারকুল আসমা ছিদ্দিকা র. মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুচ্ছালাম কুদছী রহ. এর প্রথম ইন্তেকাল বার্ষিকী রবিবার (৭ এপ্রিল)।
তিনি মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ৭ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন। দেখতে দেখতে বিশিষ্ট এ আলেমেদ্বীনের ইন্তেকালের এক বছর পূর্ণ হয়ে গেল। ইসলামী শিক্ষা বিস্তার, দ্বীনি দাওয়াত, ইসলামী আন্দোলন, সমাজ সংস্কার, মানবসেবা ও আদর্শিক লেখালেখিতে তিনি সরব ও সক্রিয় ছিলেন।
বরেণ্য এ আলেমেদ্বীন কর্মজীবনে জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রামু রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় দীর্ঘকাল দ্বীনি শিক্ষকতার গুরুত্বপূর্ণ খেদমত আঞ্জাম দেন। পরবর্তীতে আপন উস্তায মাওলানা আইয়ুব আনছারী রহ. কে নিয়ে রাজারকুল আসমা ছিদ্দিকা র. মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আমৃত্যু এ মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবে দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। পাশাপাশি তিনি বহু মসজিদ -মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, নির্মাণ ও পরিচালনায়ও সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই সাথে তিনি ছিলেন একাধারে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি রামু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা প্রচার সম্পাদক, রামু প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা মক্কার ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, রামু লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা। দৈনিক দৈনন্দিন পত্রিকায় বেশ কিছুকাল “ইসলাম ও জীবন” বিভাগীয় সম্পাদক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয় ও সমসাময়িক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কলম ধরেছেন। রামু বাইপাস স্টেশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠায় তাঁর অগ্রণী ভূমিকা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি আমৃত্যু এ মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। অনৈসলামিক ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধেও তিনি ছিলেন এক আপোষহীন সংগ্রামী নেতা।
এদিকে বিশিষ্ট আলেমেদ্বীনের রুহের মাগফিরাত কামনা ও দরজাত বুলন্দি কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. আ. ফ. ম খালিদ হোসেন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা হাফেজ ছালামতুল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আ. হ. ম নুরুল কবির হিলালী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন হাবিব, কক্সবাজার ইসলামী সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুরুল হক চকোরী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাজী মোহাম্মদ এরশাদুল্লাহ, প্রাবন্ধিক আখতারুল আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এড. হোসাইন আহমদ আনছারী, রামু প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার এস. মোহাম্মদ হোসেন, ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর, আসমা ছিদ্দিকা র. মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা জায়নুল আবেদীন, জেলা ইসলামী ছাত্রসমাজের সভাপতি হাফেজ শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ দিদারুল আলম, রামু উপজেলা সভাপতি মুহাম্মদ মোরশেদ ফয়েজ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল করিম, রামু লেখক ফোরামের সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর, সাধারণ সম্পাদক খলীলুল্লাহ ফুরকান আমেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ সরওয়ার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গতবছরের ২৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) তিনি লিংক রোড থেকে মোটর সাইকেল যোগে রামু ফেরার পথে চট্টগ্রামগামী শ্যামলীমা নামক বেপরোয়া একটি গাড়ী পিছন দিক থেকে তাকে ধাক্কা দিলে মোটর সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে তার ডান পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরতর আহত হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হয়ে ট্রিটমেন্ট হসপিটাল নামের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের আজকের এই দিনে ভোর ৫ টা ২০ মিনিটে মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চিরতরে নাফেরার দেশে চলে যান। অত্যন্ত সজ্জন এ আলেমেদ্বীনের ইন্তেকালে কক্সবাজারের সর্ব মহলে নেমে এসেছিলো শোকের ছায়া। একই দিন (৭ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫ টায়, তাঁরই হাতে সাজানো দ্বীনি বাগিচা রাজারকুল পশ্চিম সিকদার পাড়া আসমা ছিদ্দিকা র. মাদ্রাসা মাঠে বিশাল নামাজে জানাযা শেষে মরহুমকে দাফন করা হয়। ইন্তেকালের সময় তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে যান।