ইমাম খাইর, সিবিএন:
রোহিঙ্গারা আমাদের মেহমান। যেতে না চাইলে তাদের জোর করে তাড়িয়ে দেয়া যাবেনা। রাষ্ট্রীয় পলিসি একটু কঠিন। প্রক্রিয়া শেষ করেই প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করা হবে।
রবিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর এক আবাসিক হোটলের কনফারেন্স হলে ‘তহবিলের স্বচ্ছতা এবং সমন্বিত উদ্যোগ’ শীর্ষক সভায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মুহাম্মদ আবুল কালাম এমন মন্তব্য করেন। সিসিএনএফ ও কোস্ট ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে কর্মশালায় তিনি মূখ্য আলোচক ছিলেন।
মি. মুহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গাদের একই জিনিস বারবার দেয়ার কারণে ব্যাপক অপচয় হচ্ছে। অপচয় রোধ করতে হবে। ত্রাণের পণ্য সস্তায় বাজারে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যে কোন কাজে সততাই মূল পুঁজি। সততার সঙ্গে সব কাজ করা যায়। যে যার অবস্থান থেকে সৎ হওয়া দরকার।
সভাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক, সিসিএন এফ-এর কো চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী এবং পালস কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক, সিসিএন এফ এর কো-চেয়ার আবু মোরশেদ চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন- কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নুরুল আনোয়ার, আইএসসিজির সমন্বয়ক মার্গো, অক্সফাম কর্মকর্তা আনিকা, সিনিয়র সিআইসি ওবাইদুল্লাহ, ডিআরআরও রইস উদ্দিন প্রমুখ।
সভায় জানানো হয়, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১২৯৬ জন বিদেশী নাগরিক কাজ করেন। তারা প্রায় প্রতিজনই একেকটি গাড়ি ব্যবহার করেন। শুধু রোহিঙ্গাকেন্দ্রিক পাঁচ শতাধিক গাড়ি সড়কে চলাচল করে। যে কারণে প্রতিদিন সড়কে জ্যাম লেগে থাকে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।গাড়ি ব্যবহারে কোন শৃঙ্খলা নেই।
গ্র্যান্ড বার্গেডিং এর এই সভায় মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা আগমনের কারণে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের উপর গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মুজিবুল হক মুনির।
এতে রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতা ও সমস্যার কথা উপস্থাপন করেন।
সভায় টেকনাফের হ্নীলা ইউপি সদস্য মর্জিনা আক্তার সিদ্দিকী বলেন, মানবিকতা দেখিয়ে আজ আমরা নিজেরাই অমানবিকতার শিকার। কিছু দিন আগে লেদা এলাকায় রোহিঙ্গার হাতে স্থানীয় এক ব্যক্তি খুন হয়। এঘটনায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। মামলায় এক মাস ৫ দিন জেল খেটেছি। আমাকে রিমান্ডে পর্যন্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে আমরা নির্যাতিত। আমরা তাদের পায়খানার উপর অবস্থান করছি। বাংলাদেশে বহু বিবাহ বেড়ে গেছে। রোহিঙ্গা সুন্দরী বিয়ে করে ফেলছে স্থানীয়রা। ওদের একজনের জন্য আমরা হাজার জন কষ্ট পাচ্ছি।
উখিয়ার পালংখালী ইউপি সদস্য নুরুল আমিন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে পাহাড় উজাড় হয়ে গেছে। বাড়ি ঘরে জালানি নেই। স্থানীয় জনসাধারণের জন্য বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থা করতে হবে।