তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম :

কমিটি ঘোষণার পর থেকে আলোচনায় থাকা চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি স্থগিত হতে যাচ্ছে। ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ফেসবুকে চট্টগ্রাম কলেজ শাখার ২৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। ওই রাতে কমিটি ঘোষণার পরই ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে কলেজের ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। অনেকে অভিযোগ করেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কমিটি রাতের আধারে ফেইসবুকের মাধ্যমে ঘোষনা করা হয়। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী এসব ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এ কমিটিকে বিতর্কিত আখ্যায়িত করে গত এক সপ্তাহ ধরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে আসছে। ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, বিস্ফোরণ ও গুলাগুলিতে অশান্ত হয়ে উঠে চট্টগ্রাম কলেজের পরিবেশ। এমনকি ২০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৭জন কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষনা দেন। সৃষ্ট বিরোধ নিরসন করতে ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে আসেন কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন, কমিটি গঠনের পর থেকে নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তাছাড়া কমিটি বিষয়ে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনেছি। তাছাড়া ৫ সদস্যে একটি তদন্ত টিম কয়েকদিনের মধ্যে চট্টগ্রামে আসবে। এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে কমিটি স্থগিত করা হবে। শোভন বলেন, আমি নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে বলেছিলাম সমন্বয়ভাবে কমিটি গঠন করতে। কিন্তু তারা শুনেনি। যার কারনে আজকে এ অবস্থা। নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, সবার সাথে আলাপ আলোচনা করে আমরা কমিটি দিয়েছি।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের পদত্যাগকারী সহ সভাপতি ওবাইদুল হক বলেন, এই কমিটি পকেট কমিটি। যোগ্য নেতৃত্ব এই কমিটিতে নেই। যারা কমিটিতে আসার কথা তারা কেউ আসেনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটি নিয়ে অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে তদন্ত কমিটি পাঠানোর উদ্যোগ নেন।

১৯৮৪ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছিল। ছাত্র শিবিরের সহিংস কর্মকান্ডের কারণে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হওয়া ছাত্রলীগের প্রায় তিন দশক ধরে ওই কলেজে কোন কর্মকান্ডই ছিল না। ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ ক্যাম্পাস দখলে নেয়। এরপর থেকে কলেজ দুটিতে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলে আসছে। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরুর তিন বছর পর গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। কমিটিতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। মাহমুদুল প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং সবুজ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।