আবদুল মজিদ,চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের অবহেলিত ও শিক্ষা বঞ্চিত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে আজমনগর মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা। তবে কোন ধরণের উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি বললেই চলে এ প্রতিষ্ঠানে। একদিকে নাই কোন উন্নয়ন, অন্যদিকে বিগত ৮ বছর ধরে উক্ত প্রতিষ্ঠানে নাই কোন পরিচালনা কমিটি। পাশাপাশি শিক্ষকের বেশ কয়েকটি পদও শূন্য রয়েছে। গতকাল ৩১জুলাই’১৮ইং সকাল সাড়ে ১০ টায় অত্র প্রতিষ্ঠানে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় নানাভাবে বঞ্চিত এ প্রতিষ্ঠানের বেহাল দৃশ্য।

প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, বিগত ১৯৮৪ সনে এলাকার শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের ইসলামী, আদর্শিক ও মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত গড়ে তোলতে বদরখালী আজমনগর মজিদিয়া দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন বদরখালী সমিতিসহ এলাকার গুণিজনরা। এরপর বিগত ১৯৮৭ সনে সরকারের তালিকায় এসে এমপিওভূক্ত হয় এ প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে ৫জন সহকারী শিক্ষক ও ৩জন কর্মচারী এমপিওভূক্ত হয়ে মাসিক ১,১৩৪৬৯ টাকা বেতন পান সরকারের কাছ থেকে। ১ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পযর্ন্ত অধ্যায়নরত প্রায় ৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি কর্তৃক প্রতিষ্ঠালগ্নে দেয়া ১ একর জমি, মাদরাসার নামীয় ৬০ শতক লবণ মাঠ ও ৬০ শতক ধানী (চাষাবাদী) জমি। ওই জমি বন্ধকী ছাড়াও লাগিয়ত হিসেবে বাৎসরিক অনুমানিক ৫০হাজার টাকা আয় রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া উপবৃত্তি’র সাথে প্রতিষ্ঠানের আয়ে যুক্ত হয় টিউশন ফি:। শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানিয়েছেন, সরকারের ফ্যাসেলেজি ডিপার্টমেন্ট থেকে স্থাপিত ৩কক্ষ বিশিষ্ট একমাত্র ভবনটিও দিন দিন ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের সহায়তা ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয়ে নির্মিত ৫কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেড সেমিপাকা ঘরও অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি নামলেও দরজা, জানালা ও চালের উপর দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পাঠদানে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। নতুন করে একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও বর্তমান দুটি ঘর সংস্কার করা না হলে খুব সহসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বিগত ৮ বছর ধরে মাদরাসা পরিচালনায় নিয়মিত কোন কমিটি না থাকায় অত্র প্রতিষ্ঠান দেখবালের জন্য কোন ব্যবস্থা নাই। পাশাপাশি কমিটি শূন্যতায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা সত্বেও মাদরাসার শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তাই স্থানীয়রা অতিদ্রুত সময়ে বদরখালী আজম নগর মজিদিয়া দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি কিংবা এডহক কমিটি গঠন করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।

মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত নুর আহমদ শিবলী জানিয়েছেন, মাদরাসাটি ঠিকই উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েছে। আর কমিটি গঠন সংক্রান্ত সমস্যাদি দ্রুত সময়ে সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান।

জানতে চাইলে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, বদরখালী আজম নগর দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন এবং উন্নয়ন বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি তিনি ইতিপূর্বে অবগত হয়েছেন। তিনি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে স্থানীয় আলহাজ্ব ডা: ছলিমুল্লাহকে মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছেন এবং মাদরাসার প্রাথমিক উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য তার নিজ উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে ৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। তিনি যতদ্রুত সম্ভব অত্র প্রতিষ্ঠানের জন্য ১টি তিন তলা বিশিষ্ট পাকা দালান দেবেন বলে আশ্বস্থ করেন।