ডেস্ক নিউজ:
সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালাতে দিলে দেশটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানির শেয়ার বিক্রির সমান লাভবান হবে। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পত্রিকা ব্লুমবার্গ।

সৌদি আরবে নারীদের গাড়ির চালকের আসনে বসতে দেয়ার অনুমতি কার্যকর হয়েছে রোববার থেকে।

ব্লুমবার্গ ইকোনমিক্স জানিয়েছে, এর ফলে দেশটির অর্থনীতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে যোগ হবে ৯০০ কোটি ডলার (৭৬ লক্ষ কোটি টাকা)। শুধু তাই নয়, এই সময়সীমার বাইরেও নতুন নিয়মের বিভিন্ন উপকারিতা পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানির ৫ শতাংশ শেয়ারের দাম সবচেয়ে ভাল অবস্থাতে প্রায় ১,০০০ কোটি ডলার।
নারীদের গাড়ি চালানো নিষেধ এমন সর্বশেষ দেশ ছিল সৌদি আরব।

ব্লুমবার্গ ইকোনমিক্সের মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ জিয়াদ দাউদের মতে, ‘গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ার ফলে নারীরা চাকরি খুঁজতে উৎসাহী হবে। এর ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সামগ্রিকভাবে আয় ও উৎপাদন বাড়বে।’

‘তবে এসব সুফল বাস্তবায়িত হতে সময় লাগবে। কারণ চাকরিতে উৎসাহী নারীদের সাথে মানিয়ে নিতে হবে অর্থনীতিকে’ যোগ করেন তিনি।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া।

জিয়াদ দাউদ বলেন, সৌদি আরবের শ্রম বাজারে নারীদের অংশগ্রহণ কম। সৌদি আরবের মাত্র ২০% নারী অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয়। এদিক থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোর থেকেও পিছিয়ে সৌদি। ২০১৬ সালে গালফ অঞ্চলে গড়ে ৪২% নারী শ্রম বাজারের অংশ ছিল। এটা মনে রেখে সৌদি প্রশাসন ২০৩০-এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর মাধ্যমে সৌদির সমাজকে আধুনিক করাকেই লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে।

দাউদ মনে করেন, এক শতাংশ করে বাড়লেও প্রতি বছর শ্রম বাজারে নারীর সংখ্যা ৭০ হাজার করে বাড়তে পারে। এর ফলে প্রতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ০.৯ শতাংশ হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, নারীরা পার্ট টাইম কাজ করবেন নাকি ফুল টাইম তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।

সৌদির জ্বালানি মন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ মনে করেন, গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে ‘নারীরা আরও ক্ষমতাশালী ও সচল হয়ে উঠবেন এবং সময়ের সাথে সাথে কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণও বাড়িয়ে দিবেন’।

‘এর প্রভাবে তেলের চাহিদাও বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে’ ভিয়েনায় ওপেকের সম্মেলনে বলেন আল-ফালিহ।