সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :

ফাগুনের ছোঁয়ায় পলাশ-শিমুলের বনে লেগেছে আগুন রাঙা ফুলের মেলা। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহু ডাকে আবারও ফিরে এলো মাতাল করতে ঋতুরাজ বসন্ত। রঙিন-বন,গাছে-গাছে নতুন কুড়ি গজিয়েছে ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে, তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে আম গাছ গুলো। আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও’র সর্বত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে আম গাছ। প্রায় ৫০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল।

সদর উপজেলার ঈদগাঁওর চাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে। সম্প্রতি আম চাষিরা বাগানে পরিচর্চা নিয়ে এখন ব্যাস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়। দেখা গেছে গ্রামের গাছে-গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন শোভা ছড়াচ্ছে তার নিজস্ব মহিমায়। উপজেলার ঈদগাঁও-ইসলামাবাদ-জালালাবাদের চাষীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান সৃজন করে বর্তমানে অনেকেই চারা উৎপাদন করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুফলও পেয়েছে অনেকেই।

আম চাষে সফল কৃষক ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভাদিতলা গ্রামের আহমদ মিয়া জানান, পুরাপুরিভাবে এখনো সব গাছে মুকুল আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যেই গাছেই মুকুল আসবে। আমি এ আম থেকে অনেক টাকা আয় করেছি। তার মতো পার্শ্ববর্তী ভোমরিয়া ঘোনা গ্রামের অনেকেই আমের বাগান তৈরি করেছেন। তারা জানান ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন। সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে চাষিরা আম চাষে উৎসাহিত হয়ে নিজ নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন বাগান সৃজন করছেন। ধীরে ধীরে ঈদগাঁওর বিভিন্ন গ্রাম জুড়ে সস্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। উৎপাদিত আমের চাহিদাও বেড়েছে অনেক। এলাকার আম ঈদগাঁও বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ঈদগাঁওর বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য উপযোগী। বসতবাড়ীর চতুরপাশ ছাড়াও দন্ডায়মান আম গাছে মুকুল থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত গাছের আম যাতে কোন কারণে বিনষ্ট না হয় সে জন্য সার্বক্ষনিক সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে এবং কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর অনেক বেশি আমের উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।